পাইরোসেরাম

ডোনাল্ড স্টোকে


১৯৪৯ সালে আমেরিকার বিজ্ঞানী ডোনাল্ড স্টোকে কাচের প্লেটের ওপর ফটো তোলা যায় কিনা সে সম্পর্কে গবেষণা করছিলেন। একদিন তিনি কাচ তৈরীর উপাদানগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে ৬০০° সেন্টিগ্রেড উত্তাপে

গরম করার জন্য গবেষণাগারের চুল্লীর ওপর রেখেছিলেন। গবেষণার জন্য

অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজ করতে গিয়ে এক সময় তিনি ভুলেই গেলেন

সেকথা।ডোনাল্ড স্টোকের সেদিন ছিল এক বন্ধুর বাড়ী নিমন্ত্রণ, গবেষণার কাজে বেশ রাত হয়ে যেতে তিনি তাড়াতাড়ি গবেষণাগার বন্ধ করে চলে গেলেন।

বন্ধুর বাড়ীতে, রাতে আর ফিরলেন না গবেষণাগারে।

পরদিন গবেষণাগারে এসে দেখেন কাচের উপাদনগুলো তখনও উনুনেই বসানো রয়েছে। আর জমাট বেঁধে কাচের মতই স্বচ্ছ কঠিন বস্তুতে রূপান্তরিত

হয়েছে। একটু ভুলের জন্য এতটা জিনিস নষ্ট হয়ে গেল ভেবে তাঁর মন খারাপ হয়ে গেল। তিনি ঐ বস্তুটাকে হাতে নিয়ে দেখতে লাগলেন।হঠাৎ হাত ফসকে বস্তুটি পড়ে গেল মাটিতে। কিন্তু পড়ে গিয়েও বস্তুটি

অক্ষত রইলো, স্টোকে অবাক হলেন, কারণ তিনি বস্তুটিকে কাচ বলেই ভেবেছিলেন। তিনি মাটি থেকে তুলে আবার সজোরে মাটিতে ফেললেন।তবু ভাঙলো না। হাতুড়ীর আঘাত দিলেন, তবু একটা টুকরোও খসলো না

পিও থেকে। লোহায় আঘাত করলে তার যেমন দৈহিক পরিবর্তন হয়,

এক্ষেত্রে তাও হল না। বস্তুটি ছিল লোহার চেয়েও শক্ত অথচ অ্যালুমিনিয়ামেরচেয়েও হাল্কা এবং কাচের মত স্বচ্ছ কতটা উত্তাপে এবং কতক্ষণ ধরে ঐ মিশ্রিত উপাদনগুলি উত্তপ্ত হয়ে ঐ বস্তুটিতে রূপান্তরিত হয়েছে তা জানতে পারলেন না তিনি। তাই বস্তুটি নিয়ে 

তাই বস্তুটি নিয়ে গবেষণায় বসলেন। নানা অ্যাসিড প্রয়োগ করলেন, ক্ষারের সাথে ফোটালেন।প্রচণ্ডভাবে উত্তপ্ত করলেন। কিছুতেই বস্তুটি গলে গেল না। দিনরাত গবেষণা করে একসময় তিনি বুঝতে পারলেন ঠিক কতটা উত্তাপে ঐ নতুন বস্তুটি

তৈরী হতে পারে। বস্তুটির গুণাগুণ দেখে তিনি নাম দিলেন পাইরোসেরাম। পাইরোসেরামের মত অদ্ভুত জিনিস আবিষ্কার করে ডোনাল্ড স্টোকের

নাম ছড়িয়ে পড়ল। আমেরিকার মহাকাশ ও বিমান সংস্থা ডোনাল্ড স্টোকের সাথে চুক্তি করে পাইরোসেরামের ব্যবহার শুরু করল।পরীক্ষা করে দেখলেন যে পোলিও তিন ধরণের। আরো গবেষণা চালিয়ে

তিনি পোলিও রোগের প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার করলেন।জীবজন্তুর ওপর প্রয়োগ করে সফলতা পেলেন। তারপর ১৯৫৩ সালে প্রথমে নিজের দেহে তারপর পরিবারের সকলের দেহে পোলিওর টিকা

দিলেন। কোনো খারাপ লক্ষ্মণ দেখা গেল না। ক্রমে শিশুদের দেহে প্রয়োগ করে দেখলেন তাদের আর পোলিও হল না।জোনাস সঙ্ক তাঁর এই আবিষ্কারের পেটেন্ট নিয়ে বহু টাকা রোজগার

করতে পারতেন। কিন্তু তা না করে তিনি সকলকে জানিয়ে দিলেন পোলিও প্রতিষেধক টিকা প্রস্তুত প্রণালী।

পাইরোসেরাম


Post a Comment

أحدث أقدم