নিষ্ক্রিয় গ্যাস (১৮৯৪)

র‍্যামজে

প্রায় দুশ বছর আগে পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল বাতাসে হাইড্রোজেন,কার্বনডাই অক্সাইড, অক্সিজেন ও নাইট্রোজেন এই চার ধরনের গ্যাস আছে।১৭৮৫ সালে বিজ্ঞানী ক্যাভেণ্ডিস বায়ুমণ্ডলের সর্বত্র নাইট্রোজেনের পরিমাণ সমান কিনা তা পরীক্ষার জন্য গবেষণা শুরু করলেন। এই পরীক্ষা চালানোর সময় একবার কস্টিক সোডা দ্রবণের ওপর অতিরিক্ত অক্সিজেনযুক্ত বায়ু

প্রবেশ করিয়ে তাতে বার বার বিদ্যুৎ স্ফুলিঙ্গ প্রয়োগ করে বাড়তি অক্সিজেনকে পটাশিয়াম সালফাইড দিয়ে শোষণ করিয়ে একটি গ্যাসের সন্ধান পেলেন।এই গ্যাসের পরিমাণ মূল বায়ুর ১২০ ভাগের এক ভাগ মাত্র ছিল। পরীক্ষাকরে দেখা গেল গ্যাসটি নাইট্রোজেনের থেকেও বেশী নিষ্ক্রিয়। কিন্তু গ্যাসটিকে তিনি নানা পরীক্ষা করেও সনাক্ত করতে পারেননি। এরপর কেটে গেছে।১০০ বছর। ১৮৯৪ সালে বিজ্ঞানী র‍্যালে গ্যাসীয় পদার্থগুলোর ঘনত্ব নির্ণয়করতে গিয়ে দেখলেন রসায়নাগারে প্রস্তুত নাইট্রোজেন ও বায়ুমণ্ডলের থেকে

পাওয়া নাইট্রোজেনের ঘণত্ব এক নয়। র‍্যালে এই বিষয়ে বারবার পরীক্ষাকরলেন, কিন্তু ফল হল একই। তখন তিনি ধারণা করলেন বায়ুমণ্ডলে অজানা কিছু গ্যাস আছে।


র‍্যালের গবেষণার সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন বিজ্ঞানী র‍্যামজে। তাঁরা দুজনে আলাদাভাবে বহু পরীক্ষা চালাতে লাগলেন। শেষপর্যন্ত বিজ্ঞানী র‍্যামজে এই নতুন গ্যাসটির সন্ধান পেলেন, গ্যাসটির নিষ্ক্রিয়তার জন্য নাম দেওয়া হল আর্গন বা অলস গ্যাস।আর্গন আবিষ্কারের বহু দিন আগে বিজ্ঞানীরা পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় বর্ণালী

পরীক্ষা করতে গিয়ে হালকা হলদে রেখা দেখতে পান। বিজ্ঞানীরা মনে করেন এই গ্যাসের বর্ণালী সৌর আবরণেই দেখা যায়। পৃথিবীতে এরকোনো অস্তিত্ব নেই। গ্রীক ভাষায় সূর্যের হেলিওস নামানুসারে এই গ্যাসেরনাম রাখা হয় হিলিয়াম। বিজ্ঞানী হিলডে ব্র্যাণ্ড ও ক্লিভাইট প্রথম ইউরেনিয়ামখনিজে এই ধাতুর অস্তিত্বের কথা ঘোষণা করেন। ১৮৯৫ সালে বিজ্ঞানী

কাইজার বায়ুতে নিষ্ক্রিয় গ্যাস হিসাবে এর অস্তিত্ব প্রমাণ করেন।বিজ্ঞানীরা বায়ুর মধ্যে আরো কোনো গ্যাসের অস্তিত্ব আছে কিনা তা খুঁজে দেখার জন্য তরল বায়ুকে নিয়ে গবেষণা শুরু করলেন এবং তরল বায়ুকে অংশ পাতিত করে কয়েকটি নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সন্ধান পেলেন। একটির নাম দিলেন নিয়ন বা নতুন গ্যাস, একটির নাম ক্রিপটন বা গুপ্ত গ্যাস এবং আরেকটির নাম জেনন বা আগন্তুক গ্যাস। শেষপর্যন্ত ১৯১৮ সালে তেজষ্ক্রিয়তার ফলে ক্ষয়জাত পদার্থ থেকে রেডন, থোরন ও একটি ননগ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছ।এই নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি কোনো মৌলিক বা যৌগিক পদার্থের সঙ্গে কাজ করে না, কারণ এদের প্রত্যেকের পরমাণুর বাইরের খোল আটটি ইলেকট্রন দিয়ে পূর্ণ থাকে। বাতাসে এগুলি অতি অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়।


নিষ্ক্রিয় গ্যাস


Previous Post Next Post