বাংলাদেশের নদ-নদী


 বাংলাদেশের সবচেয়ে নাব্য নদী হচ্ছে মেঘনা এবং দীর্ঘতম নদীও মেঘনা। দীর্ঘতম নদ ব্রহ্মপুত্র। প্রশস্ততম নদী মেঘনা। খরস্রোতা নদী কর্ণফুলী। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আন্তর্জাতিক বা আন্তঃসীমান্ত নদী ৫৭ টি এর মধ্যে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা অভিন্ন নদী তিনটি। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা-অভিন্ন তিনটি নদী হল সাঙ্গু, মাতামুহুরী এবং নাফ। ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা অভিন্ন নদী ৫৪ টি। গঙ্গা বা পদ্মা চারটি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। গঙ্গা বা পদ্মা যে চারটি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সেগুলো হলো চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও মায়ানমারকে বিভক্তকারী নদীর নাম নাচ এবং নাফ নদীর দৈর্ঘ্য ৫৬ কিলোমিটার। বাংলাদেশ ও ভারতকে বিভক্তকারী নদীর নাম হাড়িয়াভাঙ্গা যার মোহনায় বঙ্গোপসাগর দক্ষিণ তালপট্টি /পূর্বাশা / নিউমুর দ্বীপ অবস্থিত। পদ্মা নদী মেঘনার সাথে মিলিত হয়েছে চাঁদপুরে এবং যমুনার সাথে গোয়ালন্দ।  গোয়ালন্দে ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার সাথে মিলিত হয়েছে। মেঘনা নদী ব্রহ্মপুত্র নদীর সাথে মিলিত হয়েছে ভৈরব বাজারে সুরমা ও কুশিয়ারা মিলিত হয়েছে হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলার মার্কুলি নামক স্থানে। কুশিয়ারা পুনরায় সুরমার সাথে মিলিত হয়েছে কালনি নামক ধারণ করে দক্ষিণ দিকে ভৈরব উপজেলার ভৈরব বাজার পর্যন্ত প্রবাহিত হওয়ার পর সুরমার অপর শাখা ধনুর সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে প্রবাহিত হয়েছে। বাঙালি নদী ও যমুনা নদীর সংযোগস্থল বগুড়াতে। বাংলাদেশের জলসীমায় উৎপত্তি ও সমাপ্তি নদী হালদা। বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র এই হালদায় অবস্থিত। হালদা নদী থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছের পোনা সংগ্রহ করা হয়। রুপসা নদীর নামকরণ করা হয়েছে রূপলাল সাহার নাম অনুসারে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে কুলিখ, আত্রাই, পুনর্ভবা ও টাঙ্গন। কুলিক ব্যতীত অবশিষ্ট তিনটি নদী পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি চর রয়েছে যমুনা নদীতে। বাংলাদেশের প্রধান নদী বন্দর নারায়ণগঞ্জ। পদ্মা নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে এর ভারতীয় নাম গঙ্গা। ব্রহ্মপুত্র বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে কুড়িগ্রাম দিয়ে এবং মেঘনা নদী প্রবেশ করেছে সিলেট দিয়ে। 


নদ নদীর উৎপত্তি 

পদ্মা নদীর উৎপত্তি হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেক। মেঘনা নদীর উৎপত্তি আসামের নাগা মনিপুর পাহাড়ের দক্ষিণে লুসাই পাহাড় থেকে । যমুনা নদীর উৎপত্তি কৈলাস শৃঙ্গের মানস সরোবর থেকে। কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তি মিজোরামের লুসায় পাহাড় থেকে। করতোয়া নদীর উৎপত্তি সিকিমের পর্বত অঞ্চল থেকে। মাতামুহুরি নদীর উৎপত্তি লামার মইভার পর্বত থেকে। তিস্তা নদীর উৎপত্তি সিকিমের পর্বত অঞ্চল থেকে। সাঙ্গু নদীর উৎপত্তি আরাকান পাহাড় থেকে। মহানন্দা নদীর উৎপত্তি হিমালয় পর্বতের মহালদিরাম পাহাড় থেকে। 


বিভিন্ন নদীর শাখা 

পদ্মা নদীর শাখা হলো মধুমত,  আড়িয়াল খাঁ, ভৈর,  গড়াই, ইছামতি, কুমার ও মাথাভাঙ্গা। 

যমুনা শাখার নদী ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা। যমুনার উপনদী তিস্তা, ধরল,  করতোয়া, আত্রাই, বাঙ্গালী। 

মেঘনার উপনদী শীতলক্ষা, গোমত,  ডাকাতিয়,  তিতাস। 

 

বিভিন্ন নদীর তীরে অবস্থিত জেলা সমূহ 

বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত ঢাক।  সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত সিলে।  কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবস্থিত বরিশাল। কপোতক্ষ  নদীর তীরে অবস্থিত যশোর। নাফ নদীর তীরে  অবস্থিত টেকনাফ। ব্রহ্মপুত্র তীরে অবস্থিত ময়মনসিংহ। পদ্মার তীরে  অবস্থিত সারদা। করতোয়া নদীর তীরে  অবস্থিত মহাস্থানগড়। 


বিভিন্ন নদীর অপর নাম 

পদ্মা নদীর অপর নাম গঙ্গা এবং কীর্তিনাশা, যমুনার অপর নাম জোনাই, ব্রহ্মপুত্রের অপর নাম লোহিত্য, বুড়িগঙ্গা নদীর অপর নাম দোলাই। 



Previous Post Next Post