পৌষপার্বণ কী 

পৌষপার্বণ বাঙালী হিন্দুদের পিঠা উৎসব।পৌষ সংক্রান্তির পূর্বদিন থেকে এক সময়ে বাড়ি বাড়ি নানা উপকরণে নানা জাতের পিঠা তৈরির  ধুম পড়ে যেত এবং ১লা মাঘ পর্যন্ত এই  উৎসব চলতো।  গুপ্তকবি পৌষপার্বণ সম্পর্কে  বলেছেন, 

তাজা তাজা ভাজাপুলি ভেজে ভেজে তোলে

সারি সারি হাঁড়ি হাঁড়ি কাঁড়ি করে কোলে।

আলু তিল গুড় ক্ষীর নারিকেল আর,

 গড়িতেছে পিঠে পুলি অশেষ প্রকার।

পায়েসের পুটুলি দিয়া করিয়াছে চুষি

গৃহিণীর অনুরোধে তাই শুধু চুষি।

পৌষপার্বণের পিঠা কেউ একা একা  খেত না।একজন আরেকজনের গৃহে গিয়ে আনন্দ করে খেত।এভাবে বাড়ি বাড়ি পিঠা উৎসবের ধূম পড়ে যেত।এই আচার-অনুষ্ঠান এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না। 



পৌষালীতে কী হয়?


একদা পৌষমাসের সন্ধ্যালগ্নে   গ্রামের শিশু -কিশোর আনন্দ- কোলাহলে মুখরিত করে রাখতো পাড়া-মহল্লা। তারা দল বেঁধে  লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে বাড়ি বাড়ি যেত। এবং নানাপ্রকার ছড়া গান (ব্যাঘ্র বিষয়ক) আবৃত্তি করে ধান চাল টাকা পয়সা সংগ্রহ করতো। মাসের শেষ দিনে সংগৃহীত সেই সকল দিয়া ব্যাঘ্রদেবতার পূজা বা শিরনির  ও  বনভোজনের আয়োজন হতো। বর্তমানে সেসব উৎসব-অনুষ্ঠান নাই বললেই চলে । বালকদের পৌষোল্লাসের ঐ সকল ছড়া বা গান বাংলার বিভিন্ন  অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন, মুর্শিদাবাদে পোষালো / পোষালী, ভাঁড়বোল, নদীয়ায় হোলবোল / হলুই, ময়মনসিংহে বাঘাইর বয়াত, ফরিদপুর বরিশালে কুলাইর মাগন / কুলাই ঠাকুরের ছড়া, রংপুরে সোনারায়ের গীত ইত্যাদি। 


পৌষপার্বণ




Previous Post Next Post