ফটোইলেকট্রিক এফেক্ট ও
আপেক্ষিকতা তত্ত্ব (১৯০৫)

অ্যালবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯–১৯৫৫)

ইউরোপে তখন শুরু হয়েছে নাৎসী রাজত্ব। নাৎসীরা একবার ‘দ্য ব্রাউন কুক অব হিটলার টেরর' নামে একটি বইতে লেখক হিসাবে বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের নাম দেখে দারুন রেগে যায় এবং তাঁর মাথার জন্য এক সহস্র পাউণ্ড পুরস্কার ঘোষণা করে। আইনস্টাইনকে একদিন সন্ধ্যাবেলায় এই ভয়ঙ্কর খবরটি দেওয়া হয়। তিনি তখন তাঁর প্রিয় বেহালায় সংগীত চর্চা করছিলেন। কথাটি শুনে তিনি অল্পক্ষণের জন্য বেহালা বাজানো থামিয়ে একটু হেসে বলে উঠলেন ‘এই বইটি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না এবং এর লেখকও আমি নই, তবে আমার মাথার দাম যে এত বেশি তা আমি নিজে

বুঝে উঠতে পারিনি।' খুবই শান্ত ও মৃদুভাবে এই কথাগুলি বলে তিনি আবার সংগীতচর্চায় ডুবে গেলেন।

এমনই শিশুর সারল্য শান্ত স্বভাব এবং সংগীতপ্রিয় মানুষ ছিলেন।

বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী ছেলেবেলায় স্কুলে যেতে চাইতেন না। কারণ স্কুলে গিয়ে পড়ার থেকেও মা-বাবা-ও কাকার কাছে পড়তে তাঁর বেশী ভাল লাগত। অ্যালবার্টের বাবা তাঁকে একবার ইউক্লিডের জ্যামিতির বই দিয়েছিলেন। এই বইটিই তাঁকে গণিতের প্রতি আগ্রহ জন্মাতে সাহায্য করে।বাইশ বছর বয়স থেকেই তাঁর প্রচুর মৌলিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হতে থাকে।এই প্রবন্ধগুলি ছিল তাপ, গণিত ও আলোক বিদ্যুৎ বিষয়ক।আইনস্টাইনের বিখ্যাত আবিষ্কার হলো ফটোইলেকট্রিক এফেক্ট ও আপেক্ষিকতা তত্ত্ব। এটি ১৯০৫ সালে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। এমন কতকগুলি পদার্থ আছে যেমন সেলোনিয়াম--এর ওপর আলো পড়লে আলোর প্রভাবে পদার্থ থেকে ইলেকট্রন বিচ্ছুরিত হয়। এই ইলেকট্রন প্রবাহ চলতে থাকলে পদার্থটির আশেপাশে বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টি হয়। আলোর প্রভাবে পদার্থ

থেকে ইলেকট্রন বিচ্ছুরণকে বলে ফটো এমিশন। এবং ইলেকট্রন প্রবাহের ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহের সৃষ্টিকেই বলে ফটোইলেকট্রিক এফেক্ট।আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ তত্ত্ব অনুসারে দেশ ও কালের মধ্যে গতিশীল বিশ্বে সবকিছুই একে অপরের আপেক্ষিক। কেবল আলো আর আলোর গতিবেগ হল নিত্য বস্তু, অর্থাৎ যার কোনো হের ফের হয় না।আলোর গতিবেগ হল চরম গতিবেগ। বস্তুর ভর আবার গতি নির্ভর। বস্তুর গতি যত বাড়ে ভরও তত বাড়ে। গতি যখন আলোর গতিতে পৌঁছায় তখন ভর হয় অসীম।


আইনস্টাইন বলেছিলেন পদার্থ আর শক্তি হল এক। একটির আরেকটিতে রূপান্তরিত হওয়া সম্ভব। তিনি এই শক্তির নাম দেন E,ভর হল M এবং C হল শূন্যে বা বায়ুমণ্ডলে আলোর গতিবেগ। তিনি একটি সূত্র বের করে।বিজ্ঞানীদের ধারণা বদলেদেন। সূত্রটি হল E=mc2 অর্থাৎ কোনো ভরের মধ্যে লুকিয়ে থাকে অদৃশ্য শক্তি। ভরকে শক্তিতে এবং শক্তিকে ভরে রূপান্তরিত করে তিনি এক বিপুল পারমাণবিক শক্তির উদ্ভবের কথা বলেন।

১৯২১ সালে তিনি পদার্থবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পান।


তথ্যসূত্র: বিজ্ঞানের ১০০ আবিষ্কার। 


আপেক্ষিক তত্ত্ব


Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন