আর্যদের আগমন ও অত্যাচারের কাহিনী

 আর্যদের আগমন ও অনার্যদের উপর অত্যাচার

আর্য একটি পুরোনো ইন্দো-ইরানীয় জাতিগোষ্ঠীর নাম। আর্য শব্দের মূল অর্থ কী তা না জানা গেলেও আর্যজাতি পেশা ছিল কৃষিকাজ ধারণা করা হয় আর্য শব্দের অর্থ কৃষিজীবী। আর্যরা ছিল যাযাবর। তারা কোথাও স্থায়ীভাবে বসবাস করতো না। তারা বড় সিংওয়ালা পশু পালন করতো । তাদেরই একদল ভারতের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে পরিবার (বউ,ছেলে-মেয়ে) ও পশু নিয়ে পাঞ্জাবে এসে বসতি গড়ে। অতএব পাঞ্জাব আর্যদের আদি বাসস্থান। পাঞ্জাব তাদের দেয়া না। পাঞ্জাব অর্থ পাঁচ নদী। আজ থেকে প্রায় ছয় হাজার বছর পূর্বে ভারতবর্ষে আগমন করে তারা।এই উপমহাদেশে তখন বসবাস করতো বিভিন্ন আদিম অনার্য জনগোষ্ঠী। যেমন ভীল, কোল ইত্যাদি।অনার্যরা সভ্যতা থেকে পিছিয়ে ছিল।কৃষি কাজ জানতো না।তীর-ধনুক দিয়ে পশু শিকার করতো।বনে জঙ্গলে বসবাস করতো।সভ্যতা থেকে পিছিয়ে ছিল।এখনো তারা আধুনিক সভ্যতা সংস্কৃতি থেকে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে।অনার্যরা ছিল খর্বাকৃতির ও কৃষ্ণবর্ণ। তো আর্যরা এদেশ দখল করে অনারর্যদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে। শুরু হয় যুদ্ধ।শত শত বছর ধরে যুদ্ধ চলে কিন্তু অনার্যরা বশ্যতা শিকার করেনি।যারা করেছিল তারা আর্যদের দাসে পরিণত হয়েছে। বাকীরা পালিয়ে পাহাড়-পর্বতে আশ্রয় নেয়।সেইযে কোল, ভীল ও অন্যান আদিম অনার্য জনগোষ্ঠী পাহাড় পর্বতে চলে গেল আর তারা সভ্যতায় ফিরে এলো না।আর্য-হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম ও ইংরেজরা হাজার হজার বছর ধরে ভারত শাসন করছে অথচ কোল,ভীল বা এজাতীয় পিছিয়ে পড়া আদিম জনগোষ্ঠীর কোনরূপ উন্নতি সাধন হয় নি। যাইহোক, আর্যরা বহু শতাব্দী ধরে পাঞ্জাব বসবাস করে পরে তারা তাদের রাজ্য বিস্তার করে। গঙ্গা ও যমুনার তীরে তারা রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে।কুরু ও পঞ্চাল রাজ্য। এখনকার দিল্লি শহরের পাশে ছিল কুরুরাজ্য আর কান্যকুব্জের(রমণীগনের শহর) পাশে ছিল পঞ্চাল রাজ্য।এই দুই রাজ্যের মধ্যে কোন ঝগড়াঝাঁটি ছিল না। কিন্তু পরবর্তীতে দুই রাজ্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। মহাভারতের যুদ্ধের কাহিনী মূলত কুরু ও পঞ্চাল রাজ্যদ্বয়ের মধ্যকার দ্বন্দ্বের ফলে সৃষ্টি হয়। 


আর্যদের মিথিলা গমন 

শূদ্ররা যেভাবে সৃষ্টি হলো

আর্যরা ক্রমে রাজ্য বিস্তার করতে করতে পশ্চিম হতে পূর্ব দিকে আসতে লাগলেন। তারা মিথিলা প্রদেশ অর্থাৎ বর্তমান বিহার পর্যন্ত এসেছিলেন। এ অঞ্চলেও বসবাস করতে আদিম জনগোষ্ঠী। তাদেরকে আর্যরা নিজ ধর্ম বিশ্বাসে বিশ্বাসী করে সবচেয়ে নিম্নবর্ণের মর্যদা দিলেন অর্থাৎ তাদেরকে শূদ্র নামে ডাকা হতো।এই শূদ্ররা  আর্যদের দাসে পরিণত হয়। সেসময় যে রাজ্য যতো বশি যুদ্ধবাজ সে রাজ্য ততো বেশি ক্ষমতাধর হয়ে উঠে।কখনো কুরু রাজ্য প্রতাপশালী ছিল কখনো কোশাল রাজ্য। বৌদ্ধ যখন ধর্ম প্রচার করে তখনো মগধ রাজ্য ছিল প্রতাপশালী। 


আরো পড়ুন 

মহাভারতের যুদ্ধের কাহিনী 

Blogger দ্বারা পরিচালিত.