Mbdjobs is a Bengali educational website for Students,bd jobs seeker.best jobs preparation website.

২৯/০৪/২০২৩

পৃথিবীর ইতিহাসে যত দুর্ভিক্ষের ঘটনা

 

 দেশে দেশে খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষের কারণ ও মৃত্যু

যুদ্ধ ও গৃহযুদ্ধ, প্রকৃতিক দুর্যোগ, খরা,বন্যা,অসম বন্টন, পুঁজিবাদ ইত্যাদি দুর্ভিক্ষের প্রধান কারণ। আমরা সেই সুদূর অতীত থেকে বর্তমান অব্দি দেশে দেশে যতগুলো দুর্ভিক্ষ দেখা গেছে তা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

খাদ্যসংকট
খাদ্যসংকট




চীনে দুর্ভিক্ষ 

চীনে প্রথম দুর্ভিক্ষ ৮৭৫ সালে যা ৮৮৪ সাল অব্দি চলেছিল। কৃষকেরা বিদ্রোহ করেছিল ও হুয়াং চাও শহর দখলে নিয়েছিল। পরবর্তীতে ১৩৩৩ সালল দ্বিতীয় বার দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে চীন।তৃতীয় বার দুর্ভিক্ষ হয় ১৬৩০ সালে।এছাড়াও ১৮১০,১৮১১,১৮৪৬ ও ১৮৪৯ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।এই দুর্ভিক্ষগুলো কত মানুষ দেশ ছেড়েছিলো বারা গিয়েছিল তা অজনা।নিয়ান বিদ্রোহ, তাইপিং বিদ্রোহ ও খরার কারনে ১৮৫০ থেকে ১৮৭৩ সাল পর্যন্ত চলা দুর্ভিক্ষে ১ কোটি থেকে৩ কোটি লোক মারা গিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।১৮৭৬-১৮৭৯ সাল পর্যন্ত চলা খরায় সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে ৯০ লক্ষ লোক মারা যায়।

বক্সার বিদ্রোহের কারণে ১৮৯৬ সালে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে চীন।১৯০৭ সালের দুর্ভিক্ষে চীনে প্রায় ২.৫ কোটি লোক মারা যায়।১৯২০-১৯২১ সালে ৫০ হাজার ১৯২৮-১৯৩০ সালে ৩০ লক্ষ, ১৯৩৬-১৯৩৭ সালে ৫০ লক্ষ, ১৯৪২-১৯৪৩ সালে ২০ লক্ষ লোক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে মারা যায়।খরা,বন্যা, টাইফুন ও ফসলে পোকার আক্রমণে ১৯৫৯-১৯৬১ সালে পুরো চীন জুড়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ঐ দু বছরে চীনে প্রায় ৫ কোটির বেশি মানুষ মারা যায়।


পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে যাওয়া দুর্ভিক্ষের সময় ,  কারণ ও মৃত্যুর সংখ্যা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হলো।

খ্রীস্টপূর্ব ২২০০ সালে পৃথিবীব্যাপী দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।এই দুর্ভিক্ষে ঠিক কতজন মারা যায় তা অজানা।তবে এই দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে পুরোনো মিশরীয় রাজ্য, আকাদিয়ান সম্রাজ্যের   মেসোপোটেমিয়া সভ্যতা, ইয়াং তাজি নদী এলাকার  লিয়ংঝু সাংস্কৃতির পতন হয়।এবং ধারণা করা এসময় সিন্ধু সভ্যতার  পতন হয়।

এর ফলে লোকে দলে দলে ইন্দো-ইয়োরোপীয় জনগোষ্ঠীর দেশ ভারতে পাড়ি জমায়।

এছাড়াও ৫৩৬-৫৩৬ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীব্যাপী আরো একটি দুর্ভিক্ষ হয়।


ফ্রান্সের দূর্ভিক্ষ 


৭৭৯-৭৯২,৮০৫-৮০৬,১০৯৭ সালে মারা যায় ১০ লক্ষ লোক ,১৩০৪,১৩০৫,১৩১০,১৩৩০,১৩৩৩,১৩৪৯-১৩৫১,১৩৫৮-১৩৬০,১৩৭১,১৩৯০-১৩৯১,১৫২৮,১৬৫০-১৬৫২,১৬৯৩-১৬৯৪ সালে মারা যায় ১.৫ কোটি লোক,১৭০৯-১৭১০ সালে মারা যায় ৬ লক্ষ লোক,১৭৮৮ সালে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে ফ্রান্স। 

ইউরোপ জুড়ে দূর্ভিক্ষ

১০০৫-১০০৬,১০১৬,১১২৪-১১২৬,১১৪৩-১১৪৭,১১৫০-১১৫১,১১৯৬-১১৯৭,১২২৪-১২২৬,১২৫৬-১২৫৮,১৩০২-১৩০৩,১৩১৫-১৩১৭ সালে প্রায় ৭৫ লক্ষ লোক মারা যায়, ১৩২৮-১৩৩০ সালে স্পেন, ইতালি,আয়ারল্যান্ড দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে।১৩৩৯-১৩৪০ সালেও স্পেন,ইতালি,আয়ারল্যান্ডে দুর্ভিক্ষ হয়।১৩৪৬-১৩৪৭,ফ্রান্স,ইতালি,স্পেনে দুর্ভিক্ষ হয়।১৩৭৪-১৩৭৫ সালে ফ্রান্স, ইতালি ও স্পেনে। ১৪৩৭-১৪৩৮ সালে ফ্রান্স, রোম,ও বৃটেনে দুর্ভিক্ষ হয়।১৫২১-১৫২৩ আয়ারল্যান্ডে দুর্ভিক্ষ হয়।১৫৬৯-১৫৭৪ সালে ইতালি,ফ্রান্স, জার্মান, অস্ট্রেরিয়া,ও ইউক্রেনে দুর্ভিক্ষ হয়।১৫৮৫-১৫৮৭ সালে ইতালি,ফ্রান্স, বৃটেন ও আয়ারল্যান্ডে দুর্ভিক্ষ হয়।১৫৯০-১৫৯৮ সালে ইতালি,স্পেন,অস্ট্রিয়া, সুইজারল্যান্ড ও বৃটেনে দুর্ভিক্ষ হয়।এছাড়াও ১৬১৮-১৬৪৮,১৮১৬-১৮১৭ সালে ৬৫ হাজার লোক মারা যায়।


মিশরে দুর্ভিক্ষ 

৯৬৩-৯৬৯, ১০২৫, ১০৫৫-১০৫৬,১১৬৪-১০৭২ সালে ৪০ হাজার লোক মারা যায়। ১০৫৫-১০৫৬,১১৯৯-১২০২,১২৬৪,১২৯৪।১৩৭৪-১৩৭৫ সালে ১ লক্ষ লোক মারা যায়।এছাড়াও ১৩৯৪-১৩৯৬,১৪০৩-১৪০৪ ও সর্বশেষ ১৭৮৪ সালে মিশরে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়।

ইংল্যান্ডে দুর্ভিক্ষ 

১২৩৫ সালে লন্ডনে প্রায় ২০ হাজার লোক মারা যায়।এছাড়াও ১৩২১,১৩৫১,১৩৬৯ ও ১৭২৭- ১৭২৮ সালে দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় যার মৃত্যু সংখ্যা অজানা।


ইউএস  এ দুর্ভিক্ষ 

আনসাজি সভ্যতার পতনের পর ১২৭৫-১২৯৯ সালে দুর্ভিক্ষের দেখা দেয়।এছাড়া ১৮৭৮-১৮৮০ সালের দুর্ভিক্ষে ১০০০ লোক মারা যায়।

ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষ 

২০১৬ থেকে বর্তমান অসংখ্য লোক মারা গেছে। বিশেষ করে নারী ও শিশু বেশি মারা গেছে।

সুদানে দুর্ভিক্ষ 

১৯৮৪-১৯৮৫ সালে খরা ও গৃহযুদ্ধ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ১৯৯৩ সালে, ১৯৮৮ সালে গৃহযুদ্ধের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে প্রায় ১ লক্ষ লোক মারা যায়।১৯৯৮ সালে ৭০ হাজার, ২০০৩-২০০৫ সালে ২ লক্ষ লোক মারা যায়।২০১৭ থেকে এখন পর্যন্ত সুদানে দুর্ভিক্ষ চলছে।


সোমালিয়াতে দুর্ভিক্ষ 

১৯৯১-১৯৯২ সালে খরা ও গৃহযুদ্ধে ৩ লক্ষ লোক ও ২০১১ -২০১২ সালে ৩ লক্ষ লোক মারা যায়।


কঙ্গোতে দুর্ভিক্ষ 

১৯৯৮- ২০০৪ পর্যন্ত চলা দুর্ভিক্ষে  ২৭ লক্ষ লোক মারা যায়।

ইথোপিয়াতে দুর্ভিক্ষ 

১৯৫৮ সালে ১ লক্ষ, ১৯৭২-১৯৭৩ সালে ৬০ হাজার, ও ১৯৮৩-১৯৮৫ সালের দুর্ভিক্ষে ৬ লক্ষ লোক মারা যায়। এছাড়াও ১৯৯৮-২০০০ সালের দুর্ভিক্ষে মৃত্যুর সংখ্যা অজানা।


কিউবায় ১৯৯২-১৯৯৭ সালে, নর্থ কোরিয়াতে ১৯৯৪-১৯৯৮ সালে মারা যায় ৩৫ লক্ষ, মোজাম্বিকে ১৯৮২-১৯৮৫ সালে ১ লক্ষ, উগান্ডায় ১৯৮০-১৯৮১ সালে ৩০ হাজার, কম্বোডিয়ায় ১৯৭৫-১৯৭৯ সালে ৫ লক্ষ, নাইজেরিয়ায় ১৯৬৭-১৯৭০ সালে ২০ লক্ষ, ইন্দোনেশিয়াতে ১৯৪৪-১৯৪৬ সালে ২৪ লক্ষ ও ১৯৬৬-১৯৬৭ সালে ৫০ হাজার, ভিয়েতনামে ১৯৪৫ সালে ২০ লক্ষ, নেদারল্যান্ডস এ ১৯৪৪ সালে ২০ হাজার, সোভিয়েত ইউনিয়নে ১৯৪৬-১৯৪৭ সালে ১৫ লক্ষ, বুরুন্ডিতে ১৯৪৩-১৯৪৪ সালে ৫০ হাজার, ইরানে ১৯৪২-১৯৪৩ সালে ৩০ লক্ষ, মরোক্কোতে ১৯৪০-১৯৪৮ সালে ২ লক্ষ, লেবাননে ১৯১৪-১৯১৮ সালে ২ লক্ষ লোক অনাহারে মারা যায়।


জার্মানিতে দুর্ভিক্ষ 

১৭৭১-১৭৭২, ১৯৪৬-১৯৪৭ সালে,১৯১৪-১৯১৯ সালের দুর্ভিক্ষে  ৪ লক্ষ লোক মারা যায়।কারণ ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ।


জাপানে দুর্ভিক্ষ 

১২৩০-১২৩১ সালে আগ্নেয়গিরির কারণে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয় যাতে ২০ লক্ষ লোক মারা যায়।১৪৬০-১৪৬১ সালে ৮২ হাজার লোক,১৬৪০-১৪৩ সালে ১ লক্ষ, ১৭৩২-১৭৩৩ সালে ২ লক্ষ, ১৭৮০ সালে ৭ লক্ষ লোক মারা যায়। এছাড়াও ১৫৪০,১৬১৯ ও ১৮৩৩-১৮৩৭ সালে ঠিক কত মারা যায় তা অজানা। 


রাশিয়াতে দুর্ভিক্ষ 

১২৩০, ১৬০১-১৬০৩ সালে ২০ লক্ষ, ১৮৯১-১৮৯২ সালে ৫ লক্ষ, ১৯২১-১৯২২ সালে ২৯ লক্ষ, ১৯৪১-১৯৪৪ সালে ১০ লক্ষ লোক মারা যায়।


ভারত উপমহাদেশে দুর্ভিক্ষ 

ভারত উপমহাদেশে সবচেয়ে বেশি দুর্ভিক্ষের শিকার হয়েছে বাংলা,বিহার ও উড়িষ্যা।১৩৪৪-১৩৪৫ সালে মোহাম্মদ বিন তুঘলকের আমলে,১৬৩০-১৬৩২ সালে ৭৪ লক্ষ লোক,১৭৮৩-১৭৮৪ সালে ১ কোটি,১৭৮৯-১৭৯৩ সালে ১ কোটি,১৮৩২-১৮৩৩ সালপ ২ লাখ  ১৮৩৭-১৮৩৮ সালে ৪ লক্ষ, ১৮৬০-১৮৬১ সালে ২০ লক্ষ, ১৮৬৬ সালে ১০ লক্ষ, ১৮৬৯ সালে ১৫ লক্ষ, ১৮৭৩-১৮৭৪ ও ১৮৭৬-১৮৭৯ মৃত্যু অজানা, ১৮৮৮ -১৮৮৯ সালে লক্ষ ১৮৯৬-১৯০২ সালে ২০ লক্ষ, ১৯৪৩ সালে ২১ লক্ষ বা আরো অনেক বেশি লোক দুর্ভিক্ষে অনাহারে মারা যায়।