মহামতি জীবক

মগধ রাজ্যের রাজা বিম্বিসারের রাজত্বকালে  মহামতি জীবক নামে একজন শল্য চিকিৎসক রাজ চিকিৎসক হিসেবে চাকরি করতেন। সে সময় জীবকের চিকিৎসা বিদ্যা জ্ঞান সারা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক জীবক তক্ষশীলা বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন এবং সেখান থেকে উদ্ভিদ ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান অর্জন করেন। ১৪ বছরের পড়াশুনা উনি সাত বছরের সমাপ্ত করেন। অধ্যায়নের সাত বছরের মাথায় জীবক তার শিক্ষককে জিজ্ঞেস  করে  তাকে আর কতদিন অধ্যয়ন করলে  চিকিৎসা জ্ঞান সম্পূর্ণ হবে। শিক্ষক তাকে বলে তোমাকে চার দিন সময় দেয়া হলো। আশেপাশে খুঁজে খুঁজে দেখো যে কোন গাছটা ভেষজ হিসাবে ব্যবহার করা হয় আর কোন গাছটা ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয় না। জীবক চার দিন ধরে চারিদিকে খুঁজে খুঁজে দেখলেন অবশেষে ফিরে এসে শিক্ষককে বললেন ভেষজ হিসাবে ব্যবহার করা হয় না এমন গাছ পৃথিবীতে নেই। শিক্ষক সন্তুষ্ট হলেন এবং বললেন তোমার শিক্ষা সম্পন্ন হয়েছে । 

শিক্ষাজীবন শেষ করে যখন জীবক ফিরছিলেন তখন সাকেত নামক একটি গ্রামে তিনি উপস্থিত হলেন। এবং জানতে পারলেন যে এই গায়ের এক বধু সাত বছর ধরে শিরঃপীড়ায় ভুগছে। জীবক তাকে সুস্থ করেন।মহারাজ বিম্বিসার দীর্ঘদিন  ভগন্দর রোগে ভুগছিল।জীবক মহারাজকে সুস্থ করলেন। সেই থেকে জীবক রাজ চিকিৎসক হিসাবে নিযুক্ত হলেন। অবন্তীরাজ চন্দ্রপ্রদ্যোত একবার পান্ডুরোগে আক্রান্ত হলে জীবক তাকেও সুস্থ করেন।

বৌদ্ধ সাহিত্যে আছে,একবার ভগবান সম্যক্ সম্বুদ্ধে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ নিরাময় হয় জীবকের দেয়া পথ্য প্রয়োগে।

দেবদত্ত  যখন বুদ্ধকে হত্যার উদ্দেশ্য এক পাষাণ  বা তীর নিক্ষেপ করে তা বুদ্ধের পায়ে লেগে মারাত্মক জখম হয়।পায়ে পচন ধরে।জীবকে বুদ্ধের চিকিৎসা করান।বুদ্ধ সুস্থ হয়ে উঠেন। জীবকের উপাধি ছিল কৌমারভৃত্য বা কোমারভচ্চ। প্রাচীন গ্রন্থে  জীবকের নাম থাকলেও বিস্তারিত কিছু পাওয়া যায় না।তার লেখা কোন গ্রন্থেরও হদীস মেলে না।তবে তিনি যে ভারতীয় প্রথম শ্রেষ্ঠ  চিকিৎসক ছিলেন তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই।

Previous Post Next Post