আত্ম বিক্রয়ের ঐতিহাসিক দলিল
প্রাচীনকালে গ্রীক ও ইউরোপীয়দেশগুলো আফ্রিকা থেকে দাস কিনতো।আর আমাদের দেশের গরিবলোকদের কর্তা, মহাজন, রাজা-বাদশাহরা কিনে নিত।মানুষের অভাব এত বেশি ছিল যে তার নিজে নিজেদের সপরিবারে ৫-১১ টাকায় আজীবনের জন্য বিক্রি করে দিত। শুধুমাত্র দু'মুঠো ভাতের আশায় নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছে বহু মানুষ। নিচে কিছু ঐতিহাসিক দলিল তুলে ধরা হলো ।এগুলো আজ থেকে শত শত বছর পূর্বের লেখা চুক্তিপত্র এখানে বর্তমান বাংলা ভাষা বানান রীতি উচ্চারণ অতীতের বাংলা ভাষা বানান রীতির উচ্চারণ থেকে কিছুটা ভিন্ন। মনে হতে পারে বাংলা বানান ভুল বা উচ্চারণ ভুল লেখা হয়েছে আসলে দলিল পত্রে যা লেখা ছিল তা হুবহু তুলে ধরা হয়েছে।
আত্ম-বিক্রয় -১
লিপিকালঃ ১১৩৪ সাল
শ্রীমুচিরাম চঙ্গ তস্য স্ত্রী শ্রীমতী তপী তস্য পুত্র শ্রীপঞ্চা চঙ্গ ও শ্রীবারু চঙ্গ ও শ্রীরঞ্জিত চঙ্গ কন্যা শ্রীমতী কালিন্দিবালা আপ্ত বিক্রয় পত্র মিদং কাৰ্য্যঞ্চাগে আমরা সপরিবারে অন্নরিণ উপহতি ক্রেমে নগদ মূল্য তোমার স্থানে ১১ এগার রূপাইয়া পাইয়া স্বইচ্ছা পূর্ব্বক আপ্ত বিক্রি হইলাম তোমার পুত্র পৌত্র আদি ক্রেমে আমার পুত্র পৌত্র আদি ক্রেমে গোলামি করিব এহি করারে আপ্ত বিক্রয় পত্র দিলাম ইতি মনকে) ১১৩৪ চৌত্রিষ তেরিখ ১৬ ফাল্গুন (অপর পৃষ্ঠা) নিসান সহি
শ্রীমুচিরাম চঙ্গ
মিসেস টাপি
শ্রীপঞ্চা চঙ্গ
শ্রীবারু চঙ্গ ও শ্রীরঞ্জিত চঙ্গ...
মিসেস কালী চ্যাং
আত্ম-বিক্রয় পত্র-২
লিপিকালঃ ১১৬১ সাল
ইআদিকীদ শ্রীশোভারাম গুহ সুচরিতেষু লিখিতং শ্রীবাসিবার শূদ্র ওলদে শ্রীসাছুরাম শূদ্র ইরফে দেবাই শূদ্র তস্য স্ত্রী শ্রীমতী মাধবী তস্য পুত্র শ্রীরামধন শূদ্র ও শ্রীসদারাম শূদ্র তস্য ভগ্নি শ্রীমতি রতনি কওলা আপ্ত বিক্রি পত্র মিদং কাৰ্য্যঞ্চাগে আমরা সকলে মহা দুৰ্ব্বিক্ষে অন্নরিন উপহতি ক্রেমে আপন আপন সহ ইচ্ছা পূর্ব্বক তোমার স্থানে নগদ মূল্য পুরওজন দহমাসি ২১ একৈশ রূপাইয়া দত্ত বদস্ত পাইআ আপ্ত বিক্রয় হইলাম তোমা পুত্র পৌত্রাদি ক্রেমে দান বিক্রির অধিকারী হইআ নফরি দাস্যতা করাইবা আমার পুত্র পৌত্রাদি ক্রেমে নফরি দাস্যতা করিব এই করারে আপ্ত বিক্রয় পত্র দিলাম ইতি সন ১১৬১ এগার সত্ত এক সাইট তেরিখ ২৫ ফাল্গুন রোজ শুক্রবার জায় জিনিস
আরকট—১১
দহমাসি — ১০
এখানে আমি ২১ একৈশ রুপাইয়া পাইলাম
নিসান সহি
শ্রীসদারাম শুভ্র
শ্রীরামধন শূদ্র শ্ৰীমতি মাধবি
শ্রীবাসিরাম শূদ্র শ্রীমতি রতনি
আত্ম-বিক্রয় পত্র-৩
লিপিকাল - ১১৭৭ সাল
শ্রীলালা গুরুদাস রায় অওলাদে শ্রীযুক্ত মহারাজ নন্দকুমার রায় ইবনে পদ্মনাভ রায় সচ্চরিত্রেষু লিখিতং শ্রীচারু বেওয়া অওলাদে তীতু গোপ ইবনে (পৃ. ৯০) গঙ্গারাম গোপ বন্দা আটীবিকে পত্র মিদং সন ১১৭৭ এগার শত সাতাত্তরি অব্দে লিখনং কাৰ্য্যঞ্চ আগে অকালে অন্নাভাবে মরি মহাশয়ের নিকট আত্ম বিক্রয় হইলাম ভরণ পোষণ করিয়া দাস্যে দাখিল করিবেন একরার বিকাইলাম ইহাতে পলাইয়া যাই ধরিয়া আনিয়া শাস্তি করিবেন এতদর্থে বন্দা আটীবিত পত্র দিলাম ইতি সন সদর বতারিখ ৫ জমাদিলৌন মোতাবেক ১৪ই ভাদ্র শ্রীচারু বেওয়া সাং ঘরুতা।