স্থান ও গ্রামের নামের উৎপত্তি.
স্থান ও গ্রাম নামের অর্থ
আওসা =যেখানে ধানে তুষ বেশি হয় না
আখড়াশাল <স অক্ষবাট-শালা=যে গাঁয়ে আখড়াঘর
আছে।
আখালিকুল = যেখানে কাটা খাল নেই, কুলি আছে। )
আখিনা, আখনে = যে গাঁ শস্যহীন নয়
আগিনা, আগনে=যে গাঁ এগিয়ে আছে।
আর্টিসরা =যে অঞ্চলে খুব আটিশর আছে ।
আড়িয়াদহ, আঁড়িয়াদহ =যে গ্রামের কাছে নদীর দহে আগাছা প্রচুর।
আমারুন =যে গ্রামে নেড়া অথবা ষাঁড়া আম গাছ আছে।
আমিলা, আমলে = যে গাঁয়ে আম ও বেল গাছ আছে
আঙ্গুয়া = যে গ্রামে খুব আম গাছ আছে
আরগন = অন্য পথের গাঁ
আরড়া= যে গাঁয়ে ঝুরিনামা বটগাছ আছে
আরতি= যে গায়ে রাত কাটানো সুখের
অর্জুনা = যেখানে অর্জুন গাছ আছে ।
আলকুসা = যে গাঁয়ে খুব আলকুশি জাতীয় বিছুটি গাছ আছে।
আলা = যে গায়ে বেগার দিতে হয়
আলাটি = মুখের স্থান
আলিয়া = আল দিয়ে ঘেরা
আসকরণ < অশ্বকর্ণ ( Vatica Robusta)।
আসনবনি = আসন গাছের বনের পাশে
আসিন্দা= যে গাঁয়ে নতুন বসতি হয়েছে
আহিরা = ভবঘুরের গাঁ
আইআ = যে গায়ে মুসলমানের বাস নেই।
ইকড়া, ইখড়া=কাঁটা খোঁচা আগাছা বেষ্টিত গাঁ। ইকড়ার উল্লেখ কবিকঙ্কণে আছে ৷
ইছাবাছা=স্বচ্ছন্দবাসের গাঁ
ইটাচুনা =যে গাঁয়ে অনেক ইট চুনের বাড়ি ; অথবা, যেখানে অনেক ইটের টুকরো আছে।
ইড়কোনা = যে গায়ের কোণে আগাছা আছে, অথবা যে গায়ে আগাছা ও কর্ণক গাছ আছে
ইদিলপুর = যে গায়ের লোকে গোরু ইত্যাদি পশু দিয়ে ছালায় বোঝা বয়
ইন্দুটি =যে গাঁয়ে ইন্দ্রের কোষ্ঠাগার অর্থাৎ বড়ো ইদারা
আছে
ইনছুরা (= ইচুড়া) = যেখানে এঁচড় হয় খুব
কুমরুল < কুম্ভকারকুল = কুমোরদের প্রাচীন আবাস
খুশিগঞ্জ =যে বড়ো বাজারে খুশি মতো জিনিস কেনা যায়
গরিফা =যেখানে গরীব কোফা প্রজার বাস।
চাচল ≤ চঞ্চুতৈল = রেড়ির তেল ), অথবা আগাছা
তাঁতড়া = তাঁতিপাড়া
ধারেন্দা এস ধারা + ইন্দ্র +-ক (=ইন্দ্র যেখানে ধারাবর্ষণ করেন
ধুবড়ী = যেখানে প্রাচীন বট আছে
নলদা = যেখানে দয়ে প্রচুর নলগাছ
হাতিনল = যেখানে নলবনে হাতি লুকিয়ে থাকতে পারে।
হালাড়া =যেখানে খুব হালচাষ আছে অথবা হাড়ালা থেকে বিপর্যস্ত ।
হালিসহর = যে সহরের পত্তন হয়েছে হালে ।
হুগলি = চারপাশে হোগলা বন ।
হেদো-গেড়্যা = যেখানে গেড়ে প্রায় মজে গেছে।
হেলান < হেলা + অন্ন = যেখানে অন্ন সহজলভ্য
হেঁড়েলগড়িয়া = যেখানে গেড়ের ধারে হেঁড়েল চরে বেড়ায় ।
‘হরিনাই' (= হরিনাপিত ) এই ব্যক্তিনাম থেকে আগত । এই গ্রামে অনেক নাপিতের বাস
হাওড়া < হাবড়া = যেখানে নদীতট জল কাদাময় ।
হাড়মাসড়া = যে গায়ে এত কষ্ট যে হাড়মাস পর্যন্ত শুকিয়ে যায়
হাড়াল =সঙ্কীর্ণ নদীপথের অথবা খালের রক্ষক।
সুড়া, শুঁড়ো = সুড়ঙ্গের অথবা হাতির শুঁড়ের মতো।
সেলেড়া = যেখানে খুব শালি ধান হয়।
সোডে = শটি-দহ = যে দয়ে শটি হয়
সোনাজোলি = যেখানে জোলে 'সোনা' গাছ আছে।
সোনামুখী =যে গ্রামের মুখে 'সোনা' গাছ ।
সোমড়া = সোম পদবীধারী গৃহস্থের আবাসস্থান।
সিয়ালডাঙ্গা = যে ডাঙ্গায় শিয়ালের গর্ত আছে।
শিয়ালদহ= যেখানে দয়ে খুব শেওলা হয় ।
শিলাইদহ = শিলাবতী নদীর দহ
সিলুট ≤ শিলা-কোষ্ঠ= পাথরের কোঠাবাড়ি ।
সিলুড়ি < শিলা-পুটিক। (= পাথরের সুরক্ষিত গৃহ
সিঁথি = মাথায় সিঁথির মত
সুখচর = শুখনো নদীর চর।
ময়ান =মোহানা, সম্মুখ ভূমি ।
মলঙ্গা = যারা সুন্দরবন অঞ্চলে মধুসংগ্রহ করে অথবা কাঠ কাটে কিংবা সাধারণ মজুর।
মলঙ্গাপাড়া= মলঙ্গাদের বাসস্থান।
মাকড়কোলা (= যে নদীর কোলে অথবা খালে সারস চড়ে
মাকড়দা =যে দয়ে সারস চরে। এ মাকড়কোলা ! অথবা যে দয়ে “মাকড়” ঝোপ আছে।
মাখনাতোড় বা বেলেতোড় = মাখনের মত 'তোড়' গাছ
ভাণ্ডুল = যে গাঁয়ে সঞ্চয়ী বংশ আছে।
ভাতছালা বা ভাতশালা = যেখানে একদা অন্নবিতরণের কেন্দ্র
ভাতার =যে গায়ে ভাতের অভাব নেই।
ভালকি ( সুয়াত! +)<ভল্লাতক (‘কাজুবাদাম গাছ' ) +-ইক, অথবা ভল্লাঙ্ক (= একজাতীয় শাক ) + ইক ।
ভালুক । ‘ভালুকা’ গাছ অথবা আগাছার নাম কবিকঙ্কণে
আছে।
ভাড়পোতা = যেখানে ধনভাণ্ডার পোঁতা আছে ।
ভুরকুণ্ডা =গাছ বা গাছড়া বিশেষ ।
বোড়ো (=যে গাঁ নদীর জলে ডুবে যায় )<*বুড্ডক। বোদাই<বাংলা বোদা ( = ফোকলা ) - আর্যিকা । ( = বুড়ীঠাকরুণ)
বোরাকুলি (=যে গায়ে খালে নৌবহর থাকে ?
ব্যাঘ্রতটী মণ্ডল নাম = নদীর যে তাঁরে বাঘ আছে
ভইটা =যে গায়ে অনেক লোক বাস করে।
ভণ্ডুল<*ভণ্ডল, অথবা ভণ্ডকুল = ভণ্ডের বা ভীড়ের জায়গা।
ভাটকুণ্ডা = যেখানে ভাঁট গাছের ভূঁই।
ভাটরা =যেখানে ভাটের ঘর
ভাটনাপেকুয়া =ভাট-নায়ক ও পাইকরা যে গাঁয়ে থাকে
সিংহলি এল *শ্রিংপালি= বিশেষ আগাশ পূর্ণ স্থান
সিমডালি =যেখানে প্রচুর শিম ফলে।
সিয়াড়শোল = যে শোলের ধারে শেওড়া গাছ আছে
সগড়াই <শকট-আর্যিকা (স্থানীয় দেবী নাম)
সবং ≤ শতবঙ্গ = যেখানে খুব কাপাস হয়
সলদা (< শোল দা ) = যেখানে দয়ে সোলা অথবা শ্যাওলা হয়
সসঙ্গা / শাসন + গ্রাম ( যে গ্রাম রাজ্যশাসনে পাওয়া যায়
সাটিনন্দী <*ষষ্টিক + নন্দিত। (= যেখানে লোকে আনন্দে ঘাট বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
সালকিয়া = যেখানে খুব শালুক হয়।
সালতোড় = শালগাছের তোড়া
রেওড়া - পথিকের আশ্রয় বট
রুপসা - সুন্দর আবাস
রুদ- রুদ্র এক প্রকার লতানো গাছ
মেড়তলা - যে গাঁয়ের কেন্দ্র ঠাকুরস্থান।
মাহাতা - এক প্রকার শাক
মাগুরা = যেখানে খুব মাগুর মাছ হয়।
মাঙ্গনপায়ী<*মার্গণ-প্রাপিক=মেগে পাওয়া গ্রাম।
মাতলা = যেখানে নদী মাতাল ।
মানকর = যে গ্রামে মানের খাতিরে কর দেওয়া হয় মানকুলি =যেখানে খালের ধারে মান গাছ আছে।
মানগড়িয়া = যে গেড়ের ধারে মান গাছ আছে।
মান্দা =যে দয়ের ধারে মান গাছ আছে
মারোবাটী = যেখানে মাডুয়া শস্যের চাষ হয়
মালামঞ্চবাটী =মালীর মাচা বাড়ী
মালি-পাঁচঘরা = যে গায়ে পাঁচ ঘর মালী থাকে।
মালিয়াড়া ( = মালীর গাঁ ) < মাল ( উচ্চ সরসভূমি )
মালিহা = মালীর প্রত্যাশা
মাসডাঙ্গা= যে ডাঙ্গায় মাষকলাই হয়
অট্টহাসগড্ডিআ = অট্টহাস শিবের নিভৃত স্থান বা কুণ্ড
অবসিন =যে গায়ে বসতি নেই
অরুই= যেখানে ধান রোয়া হয় না।
অর্ধকরক = যে স্থানের খাজনা আর্ধেক কম
আউয়ারি = নিভৃত কাজের ঘর
আউহাগড্ডিআ < স *অ-গোধ + গর্তিক = যে নিভৃত স্থান দুর্গ নয়।
বেসো = যেখানে ভালোলোকের বাস আছে
বেহারা<ব্যবহারক =ব্যবহারে মানে যৌতুকে পাওয়া
বেহালা =যে স্থানের অবস্থা ভালো নয়
বোগাণ্ডা <*বুঙ্কট-ভাণ্ড অর্থাৎ ৰোগড়া ধানের ভাঁড়ার
বোরাই= যেখানে দাঁতহীন বৃদ্ধ দেবীর উপাসনার স্থান আছে।
বোডা = যেখানে জমি ভাল ভাব যায়
বেনদা - যে দহে প্রচুর বেনা হয়।
বেবুচা- বেঁউচ গাছের জঙ্গল
বেগুনিয়া =যেখানে খুব বেগুন ফলে।
বেগো বা বাগুয়া = যেখানে বাগান আছে
বেঙ্গা বা বঙ্গক = কাপাস ফলানো গাঁ
বেঙ্গাই =যে গ্রামে তুলাক্ষেত্রপালিকা দেবী আছেন)
বেজ্যা = বৈদ্যের গ্রাম
বেড়াবেড়ি = বেড়াঘেরা বসতির গ্রাম।
বেতড় = যেখানে নদীতটে বেতের জঙ্গল ।
বেতা = যেখানে বেতের বন।
বেতাল-বন=যেখানে বেত আর তাল বন আছে।
বেনাপোল = যেখানে বেনা আর উড়ি ধান হয়
কইকালা = যেখানে খালে কই মাছ মিলে।
কইচর=যে গাঁয়ে কই মাছ চরে বেড়ায় অর্থাৎ প্রচুর হয়
কইতাড় =যে গাঁ কয়েত গাছে ঘেরা। কয়েত মানে কদবেল গাছ।
কইজুলি= যেখানে জোলে খুব কই মাছ পাওয়া যায়
কইথন= যে গায়ে প্রচুর কয়েত গাছ আছে
কইয়ড় =যে গাঁয়ে বিশেষ জাতের বটগাছ আছে
কচুজোড়=যে গ্রামের সোঁতায় প্রচুর কচু হয়
কড়িদা= যে গায়ের কাছে কড়িদহ আছে
কড়ুই=যে গায়ে কড়ুই গাছ আছে
কদম্বা = যে গ্রামে কদম গাছ আছে।
কয়া =যে গাঁয়ে প্রচুর বুনো খেজুর গাছ আছে
কামনাড়া=যে গাঁয়ে কর্মিষ্ঠ ব্যক্তির বাস
কামারপুকুর (=যে গাঁয়ের কেন্দ্র হল কামারদের পুকুর
কামারহাটি =যে গাঁয়ে কামারদের হাট বসে
কায়বাতি=খুব ছোট গ্রাম
কাড়ালা, কারালা =যে গায়ে নৌকার মাঝি থাকে
কালনা= ছোট ভালো জায়গা
কালিয়া=যে গাঁয়ে কালিয়া গাছ আছে< কালেয়ক ( এক প্রকার সুগন্ধি বৃক্ষ
কালুই= যে গাঁয়ের মাটি কালো
কাশিয়াড়া (=যে গাঁ কাশঝাড়ে বেষ্টিত
কাষ্টকুডুম্বা<কর্ত+ কুটুম্বক=যে গায়ে বড়ো বড়ো গৃহস্থ সুতো কাটে
কাসুন্দিয়া,= যেখানে কাসুন্দে গাছ খুব আছে
কাষ্ঠশালী =যেখানে শাড়ির জন্যে সুতো
কাঁকটে =যে অঞ্চলে প্রচুর উড়ি ধান হয়।
কাকসা =যে অঞ্চলে সারস পাখি বাসা বাঁধে
Leave a Comment