ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য 

ইসলাম ধর্মকে  জানার পূর্বে ধর্ম জিনিসটা কী  তা জানা জরুরি। ধর্ম হলো এক ধরনের বিশ্বাস। যা মানুষ  লালন করে। এবং সেই বিশ্বাস অনুসারে জীবনকে পরিচালিত করে। ধর্ম বিশ্বাস দুই প্রকার যথা:

১. ঐশ্বরিক ধর্ম বিশ্বাস। 

২. অনৈশ্বরিক ধর্ম বিশ্বাস। 

১. ঐশ্বরিক ধর্ম বিশ্বাস: যে ধর্ম বিশ্বাস সৃষ্টিকর্তা ও পরকাল কেন্দ্রিক তা ঐশ্বরিক ধর্ম বিশ্বাস। ঐশ্বরিক ধর্মে ইহকালকে গুরুত্ব দেয়া হয়। যেমন: ইসলাম ধর্ম, হিন্দু ধর্ম, খ্রিস্টান ধর্ম।

২. অনৈশ্বরিক ধর্ম বিশ্বাস: যে ধর্ম বিশ্বাসে পরকাল বা বিশ্বাসের কোনো স্থান নেই। অনৈশ্বরিক বিশ্বাসের পরিধি ব্যাপক।সুনির্দিষ্ট কোনো লিখিত গ্রন্থ থাকে না।সবাই তার মন মত জীবনকে পরিচালিত করে। অনৈশ্বরিক ধর্ম বিশ্বাসীদের মূল লক্ষ্য হলো রাজনীতি। ধর্মের বিপরীতে যা যা করা প্রয়োজন তা তারা রাজনৈতিকভাবে করতে চায়।এরা সাধারণত নাস্তিক হয়ে থাকে।ধর্মকে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয়দলগুলোকে মৌলবাদী হিসাবে চিহ্নিত করে। কিন্তু ঐশ্বরিক ধর্মের মত তারাও যে আলাদা ধর্ম লালন করে তা তারা বুঝতে দেয় না।যা কিছু ভালো, তাই ধর্ম। যা মানুষ মনে লালন করে জীবন চালিত করে ও সমাজ রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই তাই ধর্ম। যেমন নাস্তিকতাও একটি ধর্ম বিশ্বাস। যারা বিজ্ঞানের অপ্রামাণিত তত্ব দিয়ে মানব সৃষ্টির ইতিহাস লেখে সেটাও একটি ধর্ম।আমরা তাকে তাত্বিক বিজ্ঞান ধর্ম বলতে পারি। জাতীয়তাবাদ একটি ধর্ম।সমাজতন্ত্রও একটি ধর্ম। ইসলামে যেমন মোহাম্মদ সা: তেমনি সমাজতন্ত্রের মোহাম্মদ হলো কাল মার্ক্স। সমাজতন্ত্রের জিহাদ হলো বিপ্লব।শুধু নাম ভিন্ন।  মসজিদে নামাজ পড়া যেমন ঐশ্বরিক ধার্মিকদের কাজ তেমনি কোথাও মোমবাতি জ্বালিয়ে মঙ্গল কামনা করাও এক প্রকার ধর্মীয় উপাসনা। হোক তা অনৈশ্বরিক। একটি রাষ্ট্রে   বহু আদর্শের, ভিন্ন  বিশ্বাসে বিশ্বাসী লোক থাকবে এটাই স্বাভাবিক এতে অন্যায় কিছু নেই। 



ঐশ্বরিক ধর্ম ও অনৈশ্বরিক ধর্মের পার্থক্য 

ইশ্বরের বিশ্বাস ব্যতীত ধর্মদ্বয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য পাওয়া যায় না। সবাই তার বিশ্বস নিয়ে চলতে চাই। উভয় দাবী করে তারা সঠিক।তারা পৃথিবীতে শান্তি আনতে পারবে। অথচ বাস্তবতা উভয়ের বিপরীত।পৃথিবীতে বহু আদর্শের জন্ম হয়েছে। বহু আদর্শ বিলুপ্ত হয়েছে। শান্তি আসে নি।একটি আদর্শিক গোষ্ঠী আরেকটি আদর্শিক গোষ্ঠীকে লড়ায়ে পরাজিত করে ক্ষমতায় এসছে।ক্ষমতাসীনরা সর্বদা শান্তিতে থেকেছে।ধীরে ধীরে তারাও ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।এভাবে হাজার হাজার বছর ধরে চলছে। শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় ধর্মীয় গোষ্ঠী ও  ধর্মহীন গোষ্ঠী উভয় পিছিয়ে। আর হিংসা তৈরিতে ধর্মীয় মৌলবাদী ও ধর্মহীন ধর্মীয় মৌলবাদী উভয় গোষ্ঠী সমগতিতে এগিয়ে চলেছে। 

এবার আসি ইসলাম ধর্ম কী সে বিষয়ে। সে সময় আরবে ধনী গরিবের বৈষম্য ছিল।সে সময় বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা সুখে জীবন-যাপন করতো।ধর্ম ব্যবসা ছিল চরমে। এই ধর্ম ব্যবসা বন্ধ করতে মোহাম্মদ জীবনের রিস্ক নিয়েছেন। চাইলে তিনি হযরত খাদিজা (রা:) এর ব্যবসাকে আরো সম্প্রসারিত করতে পারতেন। তিনি না করে সমস্ত অর্থ ব্যয় করলেন মরুর বুকে নতুন রাজনৈতিক মতবাদ প্রতিষ্ঠায়। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষদের নিয়ে ইসলাম প্রচার করলেন।যেমনটা কাল মার্ক্স করেছিলেন। মোহাম্মদ সা: দাস প্রথার বিলুপ্ত ঘটান। নাস্তিকরা যেমন বাকস্বাধীনতা চায়, ইসলামও চায়। যেমন, সূরা বাকারার ২৫৬  নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলছেন যে , "ধর্মের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। "


হযরত মোহাম্মদকে নিয়ে যত বিতর্ক 

মোহাম্মদ কী ধর্মব্যবসায়ী ছিলেন? 

যদি তিনি ধর্ম ব্যবসায়ী হবেন তাহলে তার সম্পদ কোথায়? অট্টালিকা কোথায়?  কিংবা তার সাহাবিদের বিশাল দালানগুলো কোথায়? অথচ সমসাময়িক বহু রাজার বিশাল বিলাসবহুল রাজত্ব এখনো আছে। হযরত আবু বক্কর প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি কেন ধর্ম ব্যবসা করতে যাবেন?  অভিন্ন আদর্শের  নিপীড়িত মানুষকে একত্রিত করে  যেমন রাজনৈতিক ধর্মীয় দল তৈরি তেমনি এর সাথে ইশ্বরের ধারণা মিশ্রিত করলে নতুন ঐশ্বরিক  ধর্ম তৈরি হয়। ইসলাম আলাদা কোনো ধর্ম বিশ্বাস নয়।আপনি, আপনার রাষ্ট্র, আপনার বিবেক,আপনার ধর্ম যা ভালো মনে করে ইসলাম সেগুলোকেই ভালো  মনে করে। শুধু ইবাদতের পার্থক্য রয়েছে। আরবে ইসলামের পূর্বেও আল্লাহ নামটি ছিল।দেব-দেবীদের চেয়ে শক্তিশালী, মহাপরাক্রমশালী ও অদৃশ্য কোন শক্তিকে আল্লাহ বলা হতো।উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো হযরত মোহাম্মদ সাঃ এর বাবার নাম ছিল আব্দুল্লাহ।অর্থাৎ আল্লাহর চাকর।অ্যারাবিক ভাষায় আল্লাহ্কে বলা হয় এলাহ্ (Elah), সিরিয়াক ভাষায় আলাহ (Alah), হিব্রু ভাষায় এলোহিম( Elohim) 

দি মোসলেম ডকট্রিন অব গড (১৯০৫, পৃ ২৪-২৫) বইতে

স্যামু্য়াল এম বলেন আরবদের কাবা ঘরে মোট ৩৬০ টি দেব-দেবী ছিল।কিন্তু প্রধান দেবতা ছিলেন হুবাল তার চেয়ে শক্তিশালী  হলেন আল্লাহ। যিনি মহাপরাক্রমশালী। দেব-দেবীদেরও সৃষ্টিকর্তা।সুপ্রীম পাওয়ার।তো আমরা বলতে পারি ইসলামের পূর্বেও আল্লাহ শব্দটি ছিল।হযরত মোহাম্মদ সাঃ  অদেখা, যার কোন প্রতিচ্ছবি নেই এমন সৃষ্টিকর্তাকে আল্লাহ শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছেন।


ইসলাম কী যুদ্ধে বিশ্বাস করে? 

উত্তর হলো না।ইসলাম যুদ্ধবাজ ধর্ম নয়।আত্মরক্ষার ধর্ম।পবিত্র কোরআনে আছে, "কেউ যদি অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করে সে যেন পুরো পৃথিবীর মানুষকে হত্যা করলো।" (সূরা মায়েদাহ -৩২) 


সূরা বাকারার ১৯২ আয়াত দেখুন, যুদ্ধকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। 

সে সময় আরবের লোকেরা বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাস করতো না।তাইতো মোহাম্মদ সা: কে নিজ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল।  এটা সত্য অনেকগুলো যুদ্ধ হয়েছিল। এতে উভয় মতাদর্শের লোক মারা গিয়েছিল। কিন্তু বলা হয়ে থাকে মোহাম্মদ অমুসলিমদের হত্যা করেছিল। তারা কি ইতিহাস পড়ে দেখে নি কীভাবে সাহাবীদেরকে শারিরীক অত্যাচার করে হত্যা করা হয়েছিল? তারা কি ইতিহাস পড়ে দেখে নি হযরত বেলালের মত অনারব দাসদের মর্যাদা দেয়া হয়েছিল। পৃথিবীতে বহু জাতি, ধর্ম বিশ্বাস ও সাম্রাজ্যবাদের কারণে যুদ্ধে জড়িয়েছে। নাস্তিকদের হাতে যেমন মানুষ মারা গেছে তেমনি ধার্মিকদের হাতেও মারা গেছে। সে সময় আরব নেতারা যদি মোহাম্মদ সা: কে তার মত প্রচারে বাধা নি দিত তবে ঐসকল যুদ্ধ সংঘটিত হতো না। ক্ষমতার লোভ মোহাম্মদ (সা)  এর ছিল না।থাকলে তিনি পরাজিত অমুসলিমদের ক্ষমা করে দিতেন না। মোহাম্মদ সা: সাম্রাজ্যবাদী ছিলেন না।তিনি আরবের বাইরে কখনো যুদ্ধে  লিপ্ত হউন নি। অথচ ক্ষমতা, রাজনীতি ও সাম্রাজ্যবাদের কারণে পৃথিবীতে অগণিত মানুষ মারা গেছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে। 

ইসলামে বদর যুদ্ধ থেকে হুনাইনের যুদ্ধে ১১৮ জন বা তার বেশি মুসলিম মারা গেছে

বদর থেকে হুনাইনের যুদ্ধে  ৫৮০ বা তার বেশি অমুসলিম  লোক মারা যায়। এবার বলুন মানব সৃষ্টির পর থেকে বর্তমান অবধি বিভিন্ন যুদ্ধে কতজন মানুষ মারা গেছে? আপনি যে আদর্শে বিশ্বাসী তারা কত মানুষকে হত্যা করেছে? মুসোলিনী কত মানুষকে হত্যা  করেছে? 


বিয়ের সময় হযরত আয়েশা রা: এর বয়স কত ছিল?

অনেকে বলেন  বিয়ের সময় হযরত আয়েশার বয়স ছিল ৬ বছর।বুখারীর একটি হাদীস থেকে জানা যায়।কিন্তু দু:খের বিষয় হাদিসটি সহীহ কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। রাসূলের পরলোকগমনের বহু বছর পরে হাদিস সংগ্রহ শুরু হয়।ততোদিনে সাহাবিদের অনেকে মারা গিয়েছিলেন।কোরআন লিখে রাখা হতো।পরে সংকলন করা হয়েছে। কিন্তু হাদিস লিখে রাখা হতো না।অনুশীলন করা হতো।হযরত মোহাম্মদ তার খালা খাওলা বিনতে হাকিমকে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আবু বক্করের কাছে পাঠান।হযরত আয়েশার দাদা আয়েশার বিয়ে মুতিম বিন আদির সাথে  ঠিক করে রেখেছিল। কিন্তু মুতিম বিন আদির পরিবার পরে রাজি হয় না। যেহেতু হযরত আয়েশার পরিবার ইসলাম গ্রহণ করেছে। যাইহোক প্রথম দিকে আবু বক্কর বিয়ের বিষয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়লেও শেষে রাজি হয়ে যায়।

বিয়ের সময় হযরত আয়েশার বয়স কত ছিল তা নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। গত দশকেও আমাদের পিতা মাতা আমাদের জন্ম তারিখ সাল লিখে রাখতো না।১৫০০ বছর পূর্বে সঠিক বয়স ও জন্মসাল কেউ লিখে রাখবেনা তা স্বাভাবিক। তবে মূল  ইতিহাসের সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে অনেকের আনুমানিক বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। আসল বয়স আসলে অজনা।

বুখারীর একটি হাদীসে আছে  হিশাম ইবনে উরওয়া বর্ণনা করেছেন হযরত আয়েশা বলেন, আমার যখন বিয়ে হয় তখন বয়স ছিল ছয় বছর।যখন নবী মোহাম্মদের ঘরে যায় তখন নয় বছর।

হাদীস বর্ণনার সময় হিসাম ইরাকে ছিলেন। অনেক ঐতিহাসিকগণ বলেন, শেষ বয়সে হিশামের স্মৃতি কিছুটা লোপ পেয়েছিল। 

মুসলিম শরীফে আছে হযরত আমাশ শুনেছেন ইব্রাহিম  থেকে ইব্রাহিম হাদীসটি শুনেছে আল-আসওয়াদ ইবনে ইয়াজিদ থেকে যে হযরত আয়েশার যখন বিয়ে হয় তখন  বয়স ছিল ৬ বছর।

উপরিউক্ত হাদীস বিষয়ে ঐতিহাসিকগণ বলেন যারা আয়েশার বয়স সম্পর্কে  হাদীসগুলো বর্ণনা করেছেন তারা কেউ মক্কা বা মদীনার স্থায়ী লোক নয়।তারা ইরাকী।তারা কেউ আয়েশাকে দেখে নি বরং শুনেছেন। আল্লামা কান্দালভী উপরিউক্ত হাদীস বিষয়ে বলেন,  বর্ণনাকারী তিসসা আশারা (১৯) বলতে গিয়ে ভুল করে শুধু তিসসা বলেছেন। 

তো ইতিহাস থেকে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করা যায় যে বিয়ের সময় হযরত আয়েশার বয়স ৬ ছিলনা বরং ১৬ -১৯  বছর ছিল।

মুসলিম স্কলার ইবনে ইসহাক তার সিরা রাসূলুল্লাহ্ তে যারা নবুওয়াতের প্রথম বছরে ইসলাম গ্রহণ করেছিল তাদের নাম উল্লেখ করেছেন।  যেমন হযরত আবু বক্কর সপরিবারে হযরত আয়েশাসহ ইসলাম গ্রহণ করেন।হযরত আবু উবায়দা, আল-আরকাম, ইবনে আল হারিস,আব্দুল্লাহ ইবনে আল জারাহ্ ইত্যাদি । হযরত আবু বক্কর ইসলাম গ্রহণ করে ৬১০ খ্রীস্টাব্দে। তখন আয়েশা ইসলাম গ্রহণ করে। তার মানে তিনি কথা বলতে পারতেন। আমরা যদি ৬ বছর ধরি। তাহলে ৬২০ খ্রীস্টাব্দে বিয়ের সময় আয়েশার বয়স দাঁড়ায় ১৬ বছর।৬২৩ খ্রীস্টাব্দে রাসূলের ঘরে যান তখন বয়স দাঁড়ায় ১৯ বছরে। হযরত আনাস বলেন তিনি হযরত আয়েশাকে উহুদের যুদ্ধে দেখেছেন।আরবের যুদ্ধনীতি অনুযায়ী ১৫ বছরের নিচে কেউ যুদ্ধে যেতে পারতো না।


যে বুখারীতে হযরত আয়েশার বয়স ৬ বছর আছে সেই বুখারীতে আছে হজরত আয়েশা বলেন, যখন সূরা আল  ক্বামার নাযিল হয় তখন তিনি ছোট।সূরা আল ক্বামার ৬১৪ খ্রী: নাযিল হয়। কিন্তু হযরত আয়েশাকে রাসূল ঘরে তোলে ৬২৩ খ্রীঃ তো যেহেতু সূরা নাযিলের কথা তিনি মনে করতে পেরেছেন তাই বলা যায় তখন বয়স ছিল ৬ অর্থাৎ বিয়ের সময় বয়স ছিল ছিল ১৬ আর সংসারের সময় বয়স হয়েছিল ১৯ বছর।

ঐতিহাসিকগণের মতে হযরত আয়েশা তার বোন আসমার চেয়ে ১০ বছরের  ছোট। বিখ্যাত ঐতিহাসিক গ্রন্থ   Tahdhib -al- Tahdhib ও Al Didaya wal-Nihaya তে আছে হযরত আসমা ৭৩ হিজরীতে ১০০ বছর বয়সে মারা যায়। দ্বিতীয় হিজরিতে যখন রাসূল আয়েশাকে ঘরে তোলে তখন আসমার বয়স ছিল ২৮ অথবা ২৯ বছর।তাহলে বিয়ের আয়েশার বয়স ছিল ১৮ কিংবা ১৯ বছর।


ইবনে হাজার আল আসকালবি তার রচনা আল ইসাবা  ফি তামিজ আল সাহাবা এ আল ওয়াকিদির একটি বর্ণনায় পাওয়া যায় কাবাঘর যখন পুনঃনির্মাণ করা হয় তখন মোহাম্মদ সাঃ এর বয়স ছিল ৩৫ বছর আর হযরত ফাতেমা রাঃ তখন জন্মগ্রহণ করেন। ফাতেমা হযরত আয়েশার থেকে ৫ বছরের বড়। সেই হিসাবে বিয়ের সময় আয়েশার বয়স ছিল ১৫ বছর।

ইন্দোনেশিয়ার নারী অধিকার কর্মী ও আইনজীবী হুসাইন মোহাম্মদ তার এক গবেষণায় প্রমাণ করেছেন বিয়ের সময় হযরত আয়েশার বয়স ছিল ১৯ বছর।


ইসলামে চার বিয়ে বিতর্ক 

আপনি যদি ইসলামের ইতিহাস পড়ে থাকেন তাহলে দেখতে পাবেন হযরত আয়েশা বাদে বাকী সকলে অন্যপূর্বা ছিল।  যুদ্ধে বহু পুরুষ সাহাবী মারা যায়।মুসলিম কমিউনিটিতে নারীদের সংখ্যা বেড়ে যায়।এসকল বিধবা মুসলিম  নারীদের দায়িত্ব নিতে বহু বিবাহের অনুমোদন দেয়া হয়।ইসলাম এক বিয়েকে উৎসাহিত করেছে।বহু বিবাহ বাধ্যতমূলক নয়।আবার সওয়াবের নয়। কোনো স্বামী  যদি সমঅধিকার না দিতে পারে তাহলে সে জাহান্নামে যাবে। 

পবিত্র কোরআনের সূরা নিসার ৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে "তোমরা বিয়ে কর যাকে তোমাদের  ভালো লাগে -দুটি, তিনটি অথবা চারটি।আর যদি ভয় করো সমতা রক্ষা করতে পারবে না তবে একটি"।


ইসলামে অমুসলিমদের অধিকার 

সূরা বাকারার ২৫৬  নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলছেন যে , ধর্মের ব্যাপারে কোন জবরদস্তি নেই। 

সূরা মুমতাহিন এর ৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলছেন,  " যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি।তোমাদেরকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়নি তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে কোন বাধা নেই। 

বুখারীর ৫৯৯২ নম্বর হাদিসে আছে,  যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা প্রাপ্ত কোন অমুসলিমকে হত্যা করে সেই ব্যক্তি জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। 


ইসলামের সমালোচনাকারীরা বর্ণবাদী 

তসলিমা নাসরিন বা আসাদ নুর গং বর্গ অনবরত ইসলামের মিথ্যাচার করে আসছে।বিরোধিতা তারা করতেই পারে।যখন কোন ব্যক্তির ধ্যানে জ্ঞানে শুধু একটিমাত্র ধর্মের বিরোধিতা থাকে তারা কখনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ হতে পারে না ।তাদের উচিত ইসলামের মূল ধর্মগ্রন্থগুলো পড়া। বহু জাল হাদিস রয়েছে। সেগুলো না পড়ে, পবিত্র কোরআন সর্বপ্রথমে পড়ে ইসলামের ইতিহাস পড়া উচিত। ১৪০০ বছর ধরে বহু ভুল তথ্য চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ পড়ে ইসলাম সম্পর্কে সমালোচনা করা উচিত। সমালোচনা করার অধিকার সকলের আছে। কেউ সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। প্রতিটা ধর্ম ও প্রতিটা আদর্শ প্রতিটা ব্যক্তিকে নিয়েই সমালোচনা করা যায়। মানুষ বৃক্ষের মতো পবিত্র হতে পারে না। পৃথিবীর আর সকল আদর্শবাদ দিয়ে শুধু ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলা জাতিগত নিধনের পর্যায়ে পড়ে। এটা নিঃসন্দেহে বর্ণবাদ। যারা শুধু একটি ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ  করে তারা কখনো নিরপেক্ষ,  মুক্তমনা ও বিজ্ঞানমনস্ক হতে পারে না। প্রতিটা আদর্শে কিছু না কিছু সমস্যা আছে। ধর্মের সমালোচনা করুন তবে সেটা জেনে বুঝে। শুধু ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে পড়ে থাকবেন না। তাহলে লোকে আপনাদেরকে বর্ণবাদী বলবে। 


ইসলামের বিরুদ্ধে  সমালোচনা ও প্রশ্নোত্তর
Islam and question 


Previous Post Next Post