বাংলা স্ত্রী প্রত্যয়
১. পুরুষ বাচক শব্দের সঙ্গে কতগুলো প্রত্যয় যোগ করে স্ত্রীবাচক শব্দ গঠন করে।যেমন
ঈ-প্রত্যয় যোগে: বেঙ্গমা-বেঙ্গমি, ভাগনা/ভাগনে-ভাগনি।
নী-প্রত্যয়: কামার-কামারণী, জেলে-জেলেনী, কুমার-কুমারনী, ধোপা-ধোপানী, মজুর-মজুরনী ইত্যাদি।
৩. পুরুষ বাচক শব্দের শেষে ঈ থাকলে স্ত্রীবাচক শব্দে নী হয় এবং আগের ঈ ই হয়। যেমনঃ ভিখারি-ভিখারিনী, অভিসারী-অভিসারিণী।
আনী-প্রত্যয়ঃ ঠাকুর-ঠাকুরাণী, নাপিত-নাপিতানী, মেথর-মেথরানী, চাকর-চাকরানী ইত্যাদি।
ইনী প্রত্যয়: কাঙাল-কাঙালিনী, গোয়ালা-গোয়ালিনী, বাঘ-বাঘিনী,
উন প্রত্যয়: ঠাকুর-ঠাকরুন/ঠাকুরানী
আইন প্রত্যয়: ঠাকুর-ঠাকুরাইন
নিত্য স্ত্রীবাচক শব্দ
কতগুলো শব্দ আছে যেগুলো নিত্য স্ত্রী বাচক শব্দ যার কোন পুরুষ বাচক শব্দ নেই।
যেমন সতীন, সৎমা, এয়ো, দাই, সধবা, ইত্যাদি।
কতগুলো পুরুষ বাচক শব্দে নর, মদ্দ ও স্ত্রীবাচক শব্দে মাদী বা মাদা ব্যবহার হয়। মদ্দা ঘোড়া ও মাদী ঘোড়া
কতগুলো পুরুষ বাচক শব্দের পূর্বে স্ত্রী বাচক শব্দ বসানো হয় যেমন কবি-মহিলা কবি, কর্মী-মহিলা কর্মী, শিল্পী -মহিলা শিল্পী।
কতগুলো শব্দে পুরুষ বাচক বা স্ত্রী বাচক শব্দ বসিয়ে পুরুষ বাচক বা স্ত্রী বাচক শব্দ গঠন করা হয়। যেমন
ঠাকুরপো-ঠাকুর ঝি, ঠাকুর দা- ঠাকুর মা
সংস্কৃত স্ত্রী বাচক প্রত্যয়
আ যোগে স্ত্রী বাচক শব্দ
সাধারণ অর্থে: মৃত-মৃতা, বিবাহিত-বিবাহিতা, মাননীয়-মাননীয়া, প্রিয়-প্রিয়া, প্রথম-প্রথমা, চপল-চপলা, নবীন-নবীনা, কনিষ্ঠ-কনিষ্ঠা, মলিন-মলিনা
জাতি বা শ্রেণীবাচক: অজ-অজা, কোকিল-কোকিলা, শিষ্য-শিষ্যা, ক্ষত্রিয়-ক্ষত্রিয়া, শূদ্র-শূদ্রা।
ঈ প্রত্যয় যোগে
সাধারণ অর্থে: নিশাচর-নিশাচারী, ভয়ংকর-ভয়ংকরী, রজক-রজকী, কিশোর-কিশোরী, সুন্দর-সুন্দরী, চতুর্দশ-চতুর্দশী, ষোড়শ-ষোড়শী।
জাতি বা শ্রেণীবাচক: সিংহ-সিংহী, ব্রাহ্মণ- ব্রাহ্মণী, মানব-মানবী, বৈষ্ণব- বৈষ্ণবী, কুৃমার-কুমারী, ময়ূর-ময়ূরী।
ইকা প্রত্যয় যোগে
যেসব শব্দের শেষে অক রয়েছে সেসব শব্দের অক এর স্থলে ইকা হয় যেমন, বালক-বালিকা, নায়ক-নায়িকা, গায়ক-গায়িকা, সেবক-সেবিকা, অধ্যাপক-অধ্যাপিক
কিন্তু গণক-গণকী, নর্তক-নর্তকী, চাতক-চাতকী, রজক-রজকী হয়।
ক্ষুদ্রার্থে অনেক সময় শব্দে ইকা হয় যেমন, নাটক-নাটিকা, মালা-মালিকা, গীত-গীতিকা, পুস্তক-পুস্তিকা
আনী যোগেঃ ইন্দ্র-ইন্দ্রানী, মাতুল-মাতুলানী, আচার্য-আচার্যানী, শূদ্র-শূদ্রানী, ক্ষত্রিয়-ক্ষত্রিয়ানী।
ঈনী, নী যোগে: মায়াবী-মায়াবিনী, কুহক-কুহকিনী, যোগী-যোগিনী, মেধাবী-মেধাবিনী, দুঃখী-দুঃখিনী।
বিশেষ নিয়মে সাধিত স্ত্রী বাচক শব্দ
যেসব পুরুষবাচক শব্দের শেষে "তা" রয়েছে স্ত্রীবাচক বোঝাতে সেসব শব্দের ত্রী হয়। যেমন, নেতা-নেত্রী, কর্তা-কর্তী, ধাতা-ধাত্রী।
পুরুষ বাচক শব্দের শেষে অত্, বান, মান, ঈয়ান থাকলে যথাক্রমে অতী, বতী, মতি, ঈয়সী হয়। যেমন, সৎ-সতী, পতি-পত্নী, সভাপতি-সভানেত্রী
বিদেশি স্ত্রীবাচক শব্দ
খান-খানম, মরদ-জেনানা, মালেক-মালেকা, মুহতারিম-মুহাতারিমা, সুলতান-সুলাতানা।
নিত্য স্ত্রী বাচক তৎসম শব্দঃ সতীন, অর্ধাঙ্গিনী, কুলটা,বিধবা, অসূর্যম্পশ্যা, অরক্ষণীয়া, সপত্নী ইত্যাদি।
কতগুলো পুরুষ বাচক শব্দ কোন স্ত্রী বাচক শব্দ হয় না
যেমন, কবিরাজ, কৃতদার, অকৃতদার।
No comments:
Post a Comment