অজাতশত্রুর রাজ্য দখল

মগধ রাজ্য ছিল সে সময় প্রভাবশালী ও প্রতাপশালী রাজ্য। তখন বুদ্ধ তার বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার শুরু করেন। তো সেই সময় মগধ রাজ্যের রাজা ছিলেন পরাক্রমশালী  বীর বিম্বিসার। বিম্বিসার হর্য্যাঙ্ক রাজবংশের রাজা ছিলেন। বিম্বিসার ৫৬৭ খ্রীস্টপূর্বে জন্মগ্রহণ করেন।বিম্বিসার বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। তার আমলে উত্তর ভারতে বৌদ্ধ ধর্মের বিস্তার লাভ করে।বৌদ্ধ ধর্মীয় গ্রন্থ মহাবংশ থেকে জানা যায় বিম্বিসার তার বাবার মৃত্যুর পর মাত্র ১৫ বছর বয়সে রাজ্যভার গ্রহন করেন। বিম্বিসারের  দুই ছেলে ছিল অজাতশত্রু ও জীবক কুমারভচ্চ। আরো জানা যায় দেবদত্তের প্ররোচনায়  অজাতশত্রু তার বাবা বিম্বিসারকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। বিম্বিসার তা জানতে পারে ও ছেলেকে ক্ষমা করে দেয়। পুনরায় অজাতশত্রু কুচক্রী দেবদত্তের প্ররোচনায় বিম্বিসার ও তার উপদেষ্টামন্ডলীদের গৃহবন্দী করে। গৃহবন্দী অবস্থায় বিম্বিসার ৪৯১ খ্রীস্টপূর্বে মারা যান। শুধু তাই নয় অজাতশত্রু দেবদত্তের প্ররোচনায় গৌতমবুদ্ধকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। অজাতশত্রু ক্ষমতা গ্রহণের পর  রাজ্য বিস্তার শুরু করেন। কোশল রাজা প্রসেনজিৎ বিম্বিসারকে কাশী রাজ্য উপহার হিসাবে দিয়েছিলেন। পিতার প্রতি অজাতশত্রুর এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রসেনজিৎ কাশী ফেরত নেন।এটা নিয়ে অজাতশত্রু ও প্রসেনজিৎ এর মধ্যে দুবার যুদ্ধ হয়। প্রথমবার জিতলেও দ্বিতীয়বার হেরে যান। প্রসেনজিৎ বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিলেন তাই হিংসা ভুলে অজাতশত্রুর সাথে তার মেয়েকে বিয়ে দেন।উপহার হিসাবে কাশী ফেরত দেন।


বিম্বিসার থেকে চন্দ্রগুপ্তের রাজ্য দখল



যেভাবে চন্দ্রগুপ্ত মগধ দখল করে

অজাতশত্রুর মৃত্যুর পর  ৩৭০-৩২০ খ্রীস্টপূর্ব বছরে নয় জন নন্দবংশীয় রাজা মগধ শাসন করেন। শেষ নন্দের সময় আলেকজান্ডার শতদ্রু জয় করেন যখন তিনি চলে যান। তখন চন্দ্রগুপ্ত  পাঞ্জাব থেকে অনেক সৈন্য নিয়ে এসে চাণক্য নামক একজন জ্ঞানী পন্ডিত ব্রাহ্মণ্যের সহায়তায়  মগধ দখল করে নেয়। চন্দ্রগুপ্ত নীচু বর্ণের হওয়ার কারণে অনেকে তাকে ঘৃণা করতো। চন্দ্রগুপ্তের সময় গ্রীকরা এদেশে আসতে থাকে।একজন গ্রীক তার দপ্তরে দূতের কাজ করতো। জানা যায় চন্দ্রগুপ্ত গ্রীকরাজা হেলিউকসের কন্যা হেলেনাকে বিয়ে করেন।চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি খুবই প্রতাপশালী রাজা ছিলেন। 

চন্দ্রগুপ্ত কোন ধর্মের অনুসারী ছিলেন? 

চন্দ্রগুপ্তের মা  নীচু বর্ণের ছিলেন।শেষ জীবনে গুপ্ত জৈন ধর্ম অনুসরণ করেন। চন্দ্রগুপ্ত তার ছেলেকে রাজ্যভার দিয়ে স্বেচ্ছায় অবসর নেন।তিন জৈন ধর্মের সল্লেখনা অর্থাৎ স্বেচ্ছা উপবাস করে দেহ ত্যাগ করেন।


Previous Post Next Post