Mbdjobs is a Bengali educational website for Students,bd jobs seeker.best jobs preparation website.

১২/০৫/২০২৩

চর্যাপদের লেখকগণ কারা?

চর্যাপদ কী?

 চর্যাপদ মূলত গানের সংকলন এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম কবিতা সংকলন।এই কবিতা সংকলন লিখেছেন সহজিয়া বৌদ্ধপন্থী সিদ্ধাচার্যগন। সহজিয়া ধর্ম বৌদ্ধ ধর্ম থেকে এসেছে তবে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। জানা যায় যে সে সময় ৮৪ জন বুদ্ধ সিদ্ধাচার্য ছিলেন। চর্যাপদ মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত এটি প্রাচীন বাংলার কথ্য ভাষায় লিখিত। 

যাকে সান্ধ্য ভাষা বলে। সান্ধ্য ভাষা আলো আঁধারির ভাষা নামে পরিচিত। এতে হিন্দি, অসমীয়া, উড়িয়া, মিতালী ও বাংলা ভাষার শব্দের মিশ্রণ রয়েছে। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে চর্যাপদের ভাষা বঙ্গ কামরূপী 

চর্যাপদে পাল আমলের সমাজ সংস্কৃতির কথা বলা হয়েছে ১৯৩৮ সালে ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী কর্তৃক চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কৃত হয়। চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদক কীর্তিচন্দ্র এবং সংস্কৃত টীকাকার মুনিদত্ত। সুকুমার সেনের মতে চর্যাপদের মোট কবি ২৪ জন কিন্তু ডঃ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতে ২৩ জন 

কাহুপা, ভুসুকুপা, সরহপা, কুক্কুরীপা, লুইপা, শবরপা, শান্তিপা, বিরুপা, গুন্ডরীপা, চাটিল্লপা,কম্বলারম্বপা, ডোম্বীপা,মহীধরপা,বীণাপা,তন্ত্রীপা, আজদেবপা, ঢেন্ডণপা,দারিকপা,ভাদেপা,তাড়কপা,কক্কণপা,জয়ানন্দিপা,ধর্মপা।


১৯০৭ সালে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যাপদেসহ মোট চারটি পুথি আবিষ্কার করেন। সেগুলো হলো 

চর্যাচার্য বিনিশ্চয় বা চর্যাপ,  সরহপাদের দোহা, কৃষ্ণ পাদের দোহা, ডাকার্ণব।

বাংলায় প্রচলিত ময়নামতীর গানে চর্যাপদ রচয়িতা  সিদ্ধাচার্য্যগণের কিছু কিছু বিবরণ পাওয়া যায়। ময়নামতী রাজা গোপীচাঁদের মাতা ও গোরক্ষ- নাথের শিষ্যা ছিলেন । তিনি যোগবলে জানতে পারলেন যে তার পুত্র সন্ন্যাস গ্রহণ না করলে অকালে মৃত্যুমুখে পতিত হবেন। গোপীচাঁদ তার দুই রাণী অদুনা ও পদুনার বহু বাধা সত্ত্বেও মাতার আজ্ঞায় সন্ন্যাসী হয়েছিলেন এবং গোরক্ষনাথের শিষ্য জালন্ধরিপাদ অথবা হাড়িপার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন।

ময়নামতীর গানে এই সম্প্রদায়ের নিম্নলিখিত রূপ গুরুপরম্পরা পাওয়া যায় ।

মৎস্যেন্দ্রনাথ ( মীননাথ ),গোরক্ষনাথ ( গোরখনাথ ), জালস্করিপাদ (হাড়ি-পা ), কৃষ্ণপাদ ( কামুপা, কাহ্ন পা )

যে ৪৭টি চর্যাপদ পাওয়া গেছে তার মধ্যে ১৯টির রচয়িতা কৃষ্ণপাদ বা কাহ্নপা। তিনি একটি পদে যে ভাবে জালন্ধরিপাদের উল্লেখ করেছেন তাতে মনে হয় যে ইনি তার গুরু। সুতরাং পদরচয়িতা কৃষ্ণপাদ ও গোরক্ষনাথের প্রশিষ্য কৃষ্ণপাদ একই ব্যক্তি এইরূপ অনুমান করা যেতে পারে। লুইপা দুইটি চর্যাপদের রচয়িতা। তিব্বতীয় আখ্যানের উপর নির্ভর করে কেউ কেউ একে আদি সিদ্ধ মৎস্যেন্দ্রনাথের সহিত অভিন্ন মনে করেন,  এই সমুদয় পদরচয়িতা সিদ্ধ গুরুদিগের কাল-নির্ণয় সম্বন্ধে পণ্ডিতেরা একমত নন। ডাঃ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় অনুমান করেন যে, গোরক্ষনাথ দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বর্তমান ছিলেন। কিন্তু ডাঃ শহীদুল্লাহ, নেপালে প্রচলিত কিংবদন্তীর উপর নির্ভর করে বলেছেন যে মৎস্যেন্দ্রনাথ সপ্তম শতাব্দের লোক।