বৈষ্ণব পদাবলী
শ্রী চৈতন্যদেব বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার করার পর থেকে বৈষ্ণব পদাবলী রচিত হয়। বিষ্ণুর ভক্তদেরকে বৈষ্ণব বলা হয়। বৈষ্ণব পদাবলীতে রাধা কৃষ্ণের প্রেম সম্পর্কিত ছোট ছোট কবিতা এবং রাধা কৃষ্ণের অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে ।
বৈষ্ণব পদাবলীতে পাঁচটি রসের সন্ধান পাওয়া যায় শান্ত,দাস্য, সখ্য, মধুর ও বাৎসল্য।জানা যায় বাবা আউল মনোহর দাস বৈষ্ণব পদাবলী সংগ্রহ করেন। বৈষ্ণব পদকর্তাদেরকে মহাজন বলা হয। বৈষ্ণব পদকর্তা বা চার মহাকবি হলেন
বিদ্যাপতি (১৩৮০-১৪৬০)
বৈষ্ণব পদাবলীর আদি রচয়িতা মিথিলার কবি বিদ্যাপতি। তিনি ছিলেন বৈষ্ণব পদাবলীর অবাঙালি কবি। এবং ব্রজবুলি ভাষায় পদ রচনা করেন।ব্রজবুলি হলো বাংলা ও মৈথালি ভাষার সমন্বয়ে গঠিত এক মধুর কৃত্রিম কবি ভাষা।মহাকবি বিদ্যাপতি এ ভাষার স্রষ্টা। ভাষা বাঙালি না হলেও তিনি বৈষ্ণব সাহিত্যে স্বতন্ত্র স্থান দখল করে আছেন।আধুনিক যুগে ব্রজবুলি ভাষায় পদ রচনা করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বইয়ের নাম ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী । বিদ্যাপতিকে মৈথালী কোকিল ও অভিনব জয়দেব নামের ডাকা হয়। এবং কবিকণ্ঠহার তার উপাধি।আরেক মহাকবি গোবিন্দ দাস বিদ্যাপতির ভাব শিষ্য ছিলেন।
এ ভরা বাদর মাহ ভাদর
শূন্য মন্দির মোর
উক্ত পদটির রচয়িতা বিদ্যাপতি।
বৈষ্ণব পদাবলীর পদকর্তাদের আরেকজন হলেন মহাকবি চন্ডীদাস
সই কেমনে ধরিব হিয়া
আমারি বধুয়া আন বাড়ি যায়
আমারি আঙিনা দিয়া
গুনহ মানুষ ভাই -
সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই
সই কে বা শুনাইলো শ্যাম নাম
উক্ত পদগুলো চন্ডিদাসের রচন।
গোবিন্দ দাস
গোবিন্দদাস ছিলেন মহাকবি বিদ্যাপতির শিষ্য। গোবিন্দ দাস ছিলেম সংস্কৃত পন্ডিত এবং অলংকার শাস্ত্রে পারদর্শী।
নন্দ নন্দন চন্দ্র চন্দন
গন্ধ নিন্দিত অঙ্গ
জলদ সুন্দর কাম্বু কন্দর
নিন্দি সিন্দুর ভঙ্গ
উক্ত পঙক্তিগুলো গোবিন্দ দাসের রচনা।
জ্ঞানদাস লেখা
রুপ লাগি আখি ঝুরে গুণে মন ভোর
প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর
সুখের লাগিয়া ঘর এ ঘর বাঁধিনু অনলে পড়িয়া গেল
আমিও সাগরে স্নান করিতে সকলেই গরল ভেল।।