আদিকালের হিসাব-নিকাশ 

এসময় কড়ি দিয়ে সংখ্যা গণনা শেখানো হতো।যেমন ১ কড়া, দুই কড়া, তিন কড়া ইত্যাদি। নিম্নে পুরনোকালের ধান চালের পরিমাপ, ওজন ও জমি-জমার হিসাব নিকাশের একক তুলে ধরা হলো। 

চার কড়ায় হয় ১ গন্ডা, ১০ গন্ডায় ১ দশক। আর ৮০ কড়া বা ২০ গন্ডায় হয় ১ পণ। আর ৮০ গন্ডায় হয় ১ চোক।

আগে বলেছি ২০ গন্ডা বা ৮০ কড়ায় ১ পণ হয় আর ১৬ পণে হয় ১ কাহন।আবার ৩২০ করায় ১ চোক আর ৪ চােকে হয় ১ কাহন।

আবার বুড়িকিয়া হিসাব অনুযায়ী 

১ বুড়ি সমান ৪ গন্ডা আর ৪ বুড়ি সমান ২০ গন্ডা বা ১ পণ।

কাঠাকিয়া হিসাব

২০ গন্ডায় ১ কাঠা ৫ কাঠায় ১ চোক বা ১ পুয়া আর ২০ কাঠায় ১ বিঘা।


ছটাকিয়া হিসাব

১ ছটাকে ১ পণ আর ৪ ছটাকে ১ চোক। ১৬ ছটাকে ১৬ পণ বা ১ কাহন বা ১ সের।

সেরকিয়া হিসাব

১০ সেরে ১ চোক আর ৪  চোকে অর্থাৎ ৪০ সেরে ১ মণ।


আবার ৫ ছটাকে ১ খুঁচি, ৪ খুঁচিতে ১ রেক, ৪ রেকে বা ৫ সেরে ১ পালি বা পশুরি, ২০ পালিতে ১সলি ১৬ সলিতে ১ কাহন ( ৪০ মণ ), ১৬ ছটাক বা ১৬ কোণে ১ কাঠা, ৪ কাঠা বা সেরে ১ আড়ি আর ৫ আড়িতে ১ সলি ৪ সলিতে ১ বিশ।


জমির কুড় হিসাব

কুঠব,কুড়ো বা কুড় অর্থ রৈখিক বিঘা।এক কুড় জমি বলতে এক রৈখিক বিঘা বোঝায়।রৈখিক বিঘাকে রসি নামে ডাকা হয়।অর্থাৎ চারি হাতে কাঠা আর ২০ কাঠায় ১ রসি।


তঙ্কা অর্থ  টাকা

পাই অর্থ পয়সা

বট অর্থ  কড়ি

 ১ বিঘা জমির মূল্য ১ টাকা হলে ১ কাঠার জমির মূল্য ১ টাকার ২০ ভাগের এক ভাগ =১৬ গণ্ড। ১ বিঘার মূল্য ১ আনা হলে ১ কাঠার মূল্য ১ আনার ২০ ভাগের ১ ভাগ = ১ গণ্ডা। আবার ১ বিঘার মূল্য ১ পাই হলে ১ কাঠার মূল্য ১/২০  পাই =৫/২০ গন্ডা বা ১ কড়া। ১ বিঘার মূল্য ১ কড়া হলে ১ কাঠার মূল্য ১/২০ কড়া = ৮০÷২০ তিল=৪ তিল। 


বাট্টাকষা 

অপভাষায় বাট্টাকে বাঁটা বলে।এক মুদ্রার বিপরীতে অন্যমুদ্রা নিলে যত বেশি পাওয়া যায় তাকে বাট্টাকষা বলে।অর্থাৎ মুদ্রাবিনিময়ের হার বোঝায়।


নিকর চাড়া কাকে বলে?

 চাড়া অর্থ  উচ্চতা।  যদি নৌকা খোলাখালি থাকে তবে যত খালি আছে সমস্ত উচ্চতা হতে তত বাদ দিলে যা বাকী থাকে তাকে এস্থলের চাড়া বা নিকর চাড়া ধরা হয়।


পুরোনো আমলে বাংলার জমির হিসাব-নিকাশের রীতি


Previous Post Next Post