মহাভারত অনুসারে পুত্রের প্রকারভেদ
পুত্র কাকে বলে?
ইহকাল ও পরকালের সমস্ত বিপদ-আপদ থেকে যে ত্রাণ করতে পারে বা পরিত্রাণ দিতে পারে তাকে পুত্র বলে।মহাভারতে উল্লেখ আছে বিবাহের মূল উদ্দেশ্য পুত্র সন্তান লাভ। যেমন
বহুকল্যাণমিচ্ছন্ত ঈহন্তে পিতরঃ সুতান্ ।
ভাৰ্য্যায়াং জনিতং পুত্রমাদর্শেধিব চাননম্ ।
অনপত্যঃ শুভাল্লোকান্ন প্রাপ্স্যামীতি চিন্তয়ন্
(মহাভারতের আদিপর্ব)
মহাভারতে পুত্র সন্তানের প্রকারভেদ
মহাভারত অনুসারে পুত্র সন্তান বারো প্রকার।মহাভারতের দ্বাদশ প্রকার পুত্রের বর্ণনা দেয়া হলো।
স্বয়ংজাত পুত্র : নিজ পত্নীর গর্ভে নিজের ঔরসজাত পুত্রকে স্বয়ংজাত পুত্র বলে।
প্রণীত পুত্র : নিজ বিবাহিত স্ত্রীকে অন্যকোন উত্তম পুরুষ দ্বারা প্রাপ্ত পুত্রকে প্রণীত পুত্র বলে।
পরিক্রীতপুত্র: অপর কোন পুরুষকে টাকা-পয়সা,ধন-দৌলত দিয়ে প্রলুব্ধ করে নিজ স্ত্রী নিয়োগে যে পুত্র সন্তান পাওয়া যায় তাকে পরিক্রীত পুত্র বলে।
পৌনর্ভব পুত্র : অপরের বিবাহিত স্ত্রীকে অন্যকোন পুরুষ দ্বিতীয়বার বিয়ে করে আর ঐ নারী যদি কোন পুত্র সন্তান জন্ম দেয় তাকে পৌনর্ভব পুত্র বলে।
কানীন পুত্র : বিবাহের পূর্বে কোন কুমারীর গর্ভে যে পুত্র সন্তান পাওয়া যায় তাকে কানীন পুত্র বলে।
স্বৈরিনীজ পুত্র : বিবাহিত কোন স্বৈরিনী মহিলার গর্ভে সমজাত বা উচ্চজাতের উত্তম পুরুষের মাধ্যমে যে পুত্র সন্তান লাভ হয় তাকল স্বৈরিনীজ পুত্র বলে।
উপরিউক্ত ছয়প্রকার পুত্রকে বলা হয় বন্ধুদায়দ। তারা পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতো।
নিম্নে আরো ছয়টি পুত্রের বর্ণনা দেয়া হলো যারা অবন্ধুদায়দ। তারা পিতার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারতো না।যেমন,
দত্ত পুত্র : যদি কোন জননী বা মা তার পুত্রকে কোন অপুত্রক ব্যক্তিকে দান করে বা নেয় তবে সেই পুত্রকে দত্ত পুত্র বলে।
ক্রীত পুত্র : অর্থ মূল্য দিয়ে যদি কোন পুত্রকে কিনে আনা হয় তবে সেই পুত্রকে ক্রীত পুত্র বলে।
কৃত্রিম পুত্র : যদি কোন পুত্র স্বয়ং উপস্থিত কাউকে পিতা বলে সম্বোধন করে তবে তাকে কৃত্রিম পুত্র বলে।
সহোঢ় পুত্র: যদি বিবাহের সময় কোন কোন নারী গর্ভে করে যে অন্যের সন্তান আনে তাকে সহোঢ় পুত্র বলে।
জ্ঞাতীরেতা পুত্র: নিজ ভাইসকল ব্যতীত অন্য জাতির পুত্রকে জ্ঞাতীরেতা বলে।
হীনযোনীধৃত পুত্র: নিজের চেয়ে অধম বা নিচু বর্ণের কোন নারীর সন্তানকে হীনযোনীধৃত বলা হতো।
মহাভারতের অন্য জায়গায় পাঁচ প্রকার পুত্রের কথা বলা হয়েছে। যেমন ঔরস, লব্ধ, ক্রীত, পালিত এবং ক্ষেত্রজ।এসকল পুত্ররা ইহকালে ধর্ম ও প্রীতি রক্ষা করে আর পরকালে নরক থেকে মুক্তি দেয়।এমনটাই ধারণা ছিল সে যুগের মানুষের। এই পাঁচ পুত্রকে পঞ্চবিধ পুত্র বলে।
উপরিউক্ত ১২ প্রকার পুত্র ছাড়াও আরো ৮ প্রকার পুত্রের কথা মহাভারতে উল্লেখ আছে।যারা বিভিন্ন জাতির মধ্য দিয়ে জন্ম নেয়া সংকর সন্তান।
Leave a Comment